Advertisement
E-Paper

Congress-CPIM: কংগ্রেস ছেড়ে সিপিএমে, দলবদলের নয়া ধারা কেরলেও

কেরলের প্রদেশ কংগ্রেসের তিন প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক পি এস প্রশান্ত, কে পি অনিল কুমার এবং জি রেতিকুমার গত কয়েক দিনে সিপিএমে যোগ দিয়েছেন।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:৩৮
কংগ্রেস ছেড়ে সিপিএমে যোগ অনিল কুমারের (বাঁ দিকে)

কংগ্রেস ছেড়ে সিপিএমে যোগ অনিল কুমারের (বাঁ দিকে)

দলবদল ঘিরে বাংলার রাজনীতিতে যখন প্রবল হইচই, একই প্রবণতার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে দক্ষিণে কেরলের রাজনীতিতেও। সেখানে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ছেড়ে কয়েক জন রাজ্য নেতা যোগ দিয়েছেন শাসক সিপিএমে। কংগ্রেসে ‘বিক্ষুব্ধ’ আরও কয়েক জন বাম শিবিরের দিকে পা বাড়াতে পারেন বলে সূত্রের খবর।

কেরলের প্রদেশ কংগ্রেসের তিন প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক পি এস প্রশান্ত, কে পি অনিল কুমার এবং জি রেতিকুমার গত কয়েক দিনে সিপিএমে যোগ দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে প্রশান্ত ও অনিল কুমার কংগ্রেসে যথেষ্ট প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। দু’জনকেই ‘শৃঙ্খলাভঙ্গের’ দায়ে কংগ্রেস সাসপেন্ড করেছিল। সাসপেনশন চলাকালীনই প্রশান্ত আবার এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপালকে ‘বিজেপির দালাল’ বলে তোপ দেগেছিলেন! তার জেরে প্রশান্তকে বহিষ্কার করেছিল কংগ্রেস। বিক্ষুব্ধ এই সব নেতাই দক্ষিণী ওই রাজ্যে সিপিএমকে ‘একমাত্র বিকল্প’ বলে বেছে নিয়েছেন।

তবে বাংলায় যাঁরা দলবদল করে শিরোনামে আসছেন, তাঁরা প্রায় সকলেই বিধায়ক বা সাংসদ। তাঁদের পদ ছাড়া নিয়ে বিতর্ক চলছে, কোনও কোনও ক্ষেত্রে মামলা আদালতেও গড়াচ্ছে। কেরলে অবশ্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এমন বিতর্ক এখনও বাধেনি। সিপিএম রাজ্য নেতৃত্বের যুক্তি, কংগ্রেস থেকে বিক্ষুব্ধ হয়ে বেরিয়ে নেতারা বিজেপিতে চলে গেলে তাতে সাম্প্রদায়িক শক্তির হাত শক্ত হবে। তার চেয়ে রাজ্যের ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশ বজায় রেখে ওই নেতাদের বাম শিবিরে টেনে নেওয়া ভাল।

বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফের বিপর্যয়ের পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বদল হয়েছে কেরলে। বিরোধী দলনেতার পদেও রমেশ চেন্নিতালার পরিবর্তে আনা হয়েছে ভি ডি সতীশনকে। তার পরে রাজ্যের ১৪টি জেলারই সভাপতি বদল করার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে কংগ্রেস হাই কম্যান্ড। এই পালাবদলের জেরেই সঙ্কট ঘনীভূত হয়েছে কেরলের কংগ্রেসে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চান্ডি ও প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা চেন্নিতালার অভিযোগ, রদবদলের বিষয়ে তাঁদের মতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। দুই ‘হেভিওয়েট’ নেতা বাইরে আর মুখ না খুললেও প্রকাশ্যে দলের কাজকর্মের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন অন্য নেতাদের একাংশ। এই সঙ্কট থেকেই ফায়দা তুলছে সিপিএম।

প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সিপিএমে যোগদানের অনুষ্ঠানে হাজির থেকেছেন দলের পলিটবুরো সদস্য কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন এবং ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদক এ বিজয়রাঘবন। সিপিএমে সাংগঠনিক নিয়ম যথেষ্ট জটিল। তবে অন্য দল থেকে আসা নেতারা ‘সম্মানের সঙ্গে কাজ’ করতে পারবেন বলে সিপিএম নেতৃত্বের দাবি। বিজয়রাঘবনের মতে, ‘‘কংগ্রেস তার কৃতকর্মের ফল ভুগছে। দল পরিচালনা নিয়ে অনেকের ক্ষোভ আছে। তার চেয়েও বড় কথা, অনেক ক্ষেত্রে মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে এখানে কংগ্রেসের অবস্থানের বিশেষ ফারাক নেই। আমরা সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘু, দু’রকম সাম্প্রদায়িকতারই বিরুদ্ধে। রাজ্যের ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশকে অক্ষুণ্ণ রাখতে কংগ্রেসের বিদ্রোহী নেতারা আমাদের দিকে আসছেন।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘দেশের বহু রাজ্যে কংগ্রেস ছেড়ে লোকজন বিজেপিতে নাম লেখাচ্ছে। এখানে তাঁরা সিপিএমে আসছেন। বিজেপিকে আমরা শক্তিশালী হতে দিচ্ছি না!’’

কেরল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরনের দাবি, ‘‘দলীয় শৃঙ্খলা সকলের জন্যই প্রযোজ্য। দলের সিদ্ধান্ত এবং শৃঙ্খলা না মেনে কেউ চলে গেলে কিছু করার নেই।’’ এরই মধ্যে পুতুপ্পাল্লি কেন্দ্র থেকে চান্ডির টানা ৫০ বছর বিধায়ক থাকা উপলক্ষে যে সুবর্ণ জয়ন্তী পালন শুরু হয়েছিল, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তার সমাপ্তিতে কোনও অনুষ্ঠান করছেন না কোট্টয়ম জেলা কংগ্রেস বা প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন নেতৃত্ব।

CPIM Congress LDF
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy