মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এক বারও ‘জয় শ্রীরাম’ উচ্চারণ করলেন না হলদিয়ার সভায়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘রামকার্ড’ দেখানোর কথা বলে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ‘জয় শ্রীরাম’ কাণ্ডকে যেন নতুন করে ইন্ধন দিয়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদী।
২ সপ্তাহ আগে তাঁরই আমন্ত্রণে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে গিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ শুনতে হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বক্তৃতা না দিয়ে মঞ্চ ছাড়েন মুখ্যমন্ত্রী। এ নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। সে দিনের সরকারি অনুষ্ঠানে এ সম্পর্কে কোনও কথা বলেননি নরেন্দ্র মোদী। তার পর প্রথম বাংলায় এলেন রবিবার। হলদিয়ায় রাজনৈতিক সভাতে সেই প্রসঙ্গ না তুললেও বলে গেলেন ‘রামকার্ড’ দেখানোর কথা। বলেন, ‘‘বাংলার মানুষের ফুটবল প্রেম সুবিদিত। আমি তাই ফুটবলের ভাষায় বলছি, তৃণমূল একটার পর একটা ফাউল করেছে। অপশাসনের ফাউল, দুর্নীতির ফাউল, মানুষের টাকা লোটার ফাউল। মানুষ সব দেখেছে। তাই বাংলার মানুষ তৃণমূলকে রামকার্ড দেখাতে চলেছে।’’
‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি নিয়ে ২৩ জানুয়ারি থেকেই উত্তপ্ত বাংলার রাজনীতি। শনিবার বাংলায় এসে বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডাও ওই ধ্বনিতে ‘মমতা কেন ভয় পাচ্ছেন’ তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ দিন মোদীর মুখে সেই ধ্বনি শোনা না গেলেও তাঁকে স্বাগত জানাতে বেশি করে যেন ‘জয় শ্রীরাম’ আওয়াজ তোলা হয় হলদিয়ায়।
Soon people of Bengal will show ‘Ram Card’ to Trinamool...#JaiShriRam pic.twitter.com/BjbX7Retre
— Amit Malviya (@amitmalviya) February 7, 2021
মোদী তাঁর হলদিয়ার বক্তৃতায় দাবি করেন, বিজেপি-ই বাংলায় সরকার গড়ছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে তাঁর প্রথম রাজনৈতিক জনসভায় মোদী বলেন, ‘‘বাংলায় এ বার আসল পরিবর্তন আসবে।’’
বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের সুরে মোদীর মুখেও রবিবার উঠে আসে ‘পিসি-ভাইপো’ শব্দবন্ধ। মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে মোদী বলেন, ‘‘বুয়া-ভাতিজাবাদে তিতিবিরক্ত বাংলার মানুষ। আর কিছুদিন অপেক্ষা করলেই বাংলা তোলাবাজি, সিন্ডিকেটরাজ ও অপশাসন থেকে মুক্তি পাবে।’’ সদ্যই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার মোদী আসার আগেই ওই মঞ্চ থেকে বক্তৃতা করেন। তাঁদের নাম না করে স্বাগত না জানালেও বক্তৃতার মধ্যে সেটা বুঝিয়ে দেন। বলেন, ‘‘তৃণমূলের যে কর্মীরা বুয়া ভাতিজায় অতিষ্ঠ , তারাও এখন বাংলার জন্য কাজ করতে চেয়ে ওখান থেকে ‘রাম রাম’ করে এখানে ‘জয় শ্রীরাম’ করতে চলে এসেছেন।’’
সভায় বাংলায় বক্তব্য শুরু করা থেকে বাঙালি মনীষীদের নামোচ্চারণ কিছুই বাদ দেননি মোদী। নেতাজি, বিবেকানন্দ, শ্যামাপ্রসাদ থেকে মাতঙ্গিনী হাজরা, ক্ষুদিরাম, সতীশ সামন্ত-সহ অনেকের নামই নিয়েছেন বক্তব্যে। তবে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেননি। কিন্তু তার বক্তব্য বার বার উঠে এসেছে ‘রাম’ নাম।
মোদীর বক্তব্যে রবিবার তৃণমূলকে আক্রমণ অনেকটাই প্রাধান্য পায়। তিনি বলেন, ‘‘বাংলা মমতার আশায় ছিল, কিন্তু মানুষ গত ১০ বছরে নির্মমতা দেখেছে।’’ এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১১ সালে মমতা দিদি বাংলায় পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মানুষ তাতে ভরসা করেছিল। কিন্তু বাংলায় যে সরকার এসেছে তা পরিবর্তন নয়। মোদীর কথায়, ‘‘রাজ্যে বাম শাসনের পুনর্জন্ম হয়েছে। তার মানে দুর্নীতির পুনর্জীবন, হিংসার পুনর্জীবন, অত্যাচারের পুনর্জীবন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy