পেনশন পেয়ে প্রমাণ করলেন তাঁরা কেউ মারা যাননি! কেউ গত হয়েছেন ২ বছর আগে। কেউ ৩ বছর। কিন্তু তেলঙ্গানায় এমনই ২৮ হাজার মৃত ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৬০ কোটি টাকা পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। ‘টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি চেয়ুথা প্রকল্পের উপভোক্তাদের নিয়ে সমীক্ষার সময় এই তথ্য ‘আবিষ্কার’ করেছেন সরকারি আধিকারিকেরা।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন অনুসারে, সম্প্রতি তেলঙ্গনার সরকারি সমীক্ষায় উঠে এসেছে ২৮ হাজার উপভোক্তা মারা গিয়েছেন। কিন্তু প্রতি মাসে তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে। চেয়ুথা প্রকল্পে কেউ ২০১৬ টাকা পান, কেউ পান ৪০১৬ টাকা। গত এক বছর ধরে ওই টাকা অন্যদের মতো ওই ২৮ হাজার উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও জমা পড়েছে। এখন কী ভাবে সেই টাকা ফেরানো যায়, তা নিয়ে ভাবনায় আমলারা। মাথা চুলকোচ্ছেন সরকারি আধিকারিক থেকে মন্ত্রীরা।
কী ভাবে এমন ভুল হল? তেলঙ্গানা সরকারের দাবি, উপভোক্তারা মারা গিয়েছেন— এই তথ্য তাঁদের পরিবার দেয়নি। পরিবারের সদস্যেরা মাসের পর মাস মৃত সদস্যের নামে আসা টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলেছেন। কেউ কেউ তো মৃত সদস্যের ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে নিয়ম করে টাকা তোলেন। সম্প্রতি ‘ফিল্ড ইনস্পেক্টর’-এর সমীক্ষা এবং পুরসভার পোর্টালের মাধ্যমে সত্য উন্মোচিত হয়েছে। এক আমলাকে উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, উপভোক্তা এবং পরিবারের সদস্যেরা অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও রাজ্য সরকারের প্রকল্পের টাকা তুলেছেন।’’
উল্লেখ্য, তেলঙ্গানা সরকারের চেয়ুথা প্রকল্পের অধীনে মাসিক পেনশন পান প্রায় ৪৩ লক্ষ মানুষ। বয়স্ক ব্যক্তি থেকে প্রতিবন্ধী, বিধবা থেকে বিড়ি শ্রমিক, এচআইভি রোগী থেকে অবিবাহিত মহিলারা এই প্রকল্পের সুবিধা পান। সাধারণের জন্য মাসে ২০১৬ টাকা এবং তফসিলি জাতি ও জনজাতি সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য মাসে ৪০১৬ টাকা দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের জন্য বছরে তেলঙ্গনা সরকারের বরাদ্দ প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:
৬০ কোটি টাকা ‘ক্ষতি’ হওয়ার পর এখন মৃত উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্ট বাতিল করার কাজ শুরু করেছে তেলঙ্গানা সরকার। এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, কিছু টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে। কারণ, ওই টাকা এখনও তোলা হয়নি। কিন্তু যে টাকা ইতিমধ্যে তুলে নেওয়া হয়েছে, তার কী হবে, সে নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।
তবে এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৯ সালে তেলঙ্গানাতেই ৪০ হাজার সরকারি উপভোক্তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল পেনশনের তালিকা থেকে। ওই ৪০ হাজার মানুষ মারা গেলেও তা নথিবদ্ধ ছিল না।