প্রতীকী ছবি।
ওষুধের জন্য চিনের উপর নির্ভরশীলতা কমানোর চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে ভারত। টাইমস অব ইন্ডিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই মুহূর্তে ভারতে ব্যবহৃত ওষুধ, ওষুধের কাঁচামাল (অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট বা এপিআই) এবং চিকিত্সা সরঞ্জামের ৭০-৮০% আসে চিন থেকে। এ দেশের ওষুধ শিল্প তো বটেই, সার্বিক চিকিত্সা ব্যবস্থার ক্ষেত্রেই এই নির্ভরশীলতা স্বাস্থ্যকর নয় বলে কথা উঠেছে অনেক দিন ধরেই।
আরও পড়ুন: নোবেল পেতে পারেন রঘুরাম রাজন? সংস্থার তালিকা ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে
নানান সময়ই চিনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন চলে ভারতের। সম্প্রতি ডোকলামকে কেন্দ্র করে সেই টানাপড়েন বেড়েছিল। ভবিষ্যতে কখনও ভারত-চিন সম্পর্কে বড়সড় অবনতি ঘটলে যদি চিন থেকে ওষুধ আসা বন্ধ হয়, তবে নিঃসন্দেহেই মারাত্মক সঙ্কটে পড়তে হবে ভারতকে। সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে দেশে যাতে ওষুধের আকাল দেখা না দেয়, আগেভাগেই এ বিষয়ে একটা হেস্তনেস্ত করতে চাইছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ড্রাগ রেগুলেটরি বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে একটা পথ বের করতে চাইছে মন্ত্রক। পাশাপাশি, ভারতের বাজারে যে ওষুধ আসছে, তার গুণগত মান বুঝে নেওয়ার ব্যাপারেও আরও সতর্কতা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
ওষুধের জন্য চিনের উপর এই নির্ভরশীলতা নিয়ে ২০১৪-তে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন তত্কালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। সরকারকে জানিয়েছিলেন, দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের যে টানাপড়েন চলছে তাতে ভারতের ওষুধের বাজারে একটা বিশাল সঙ্কট আসতে পারে। ডোভালের এই বার্তার পরই নড়েচড়ে বসে সরকার। দেশে ওষুধের কাঁচামাল তৈরি কী ভাবে বাড়ানো যায় তা দেখার জন্য একটা বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়। সম্প্রতি নীতিগত ভাবে বেশ কিছু সিদ্ধান্তও নিয়েছে সরকার। যার মধ্যে আছে ওষুধের প্ল্যান্টগুলোতে মাঝেমধ্যেই ইন্সপেকশনে যাওয়া; ওষুধ বা কাঁচামালের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি, লাইসেন্স ফি, সোর্সিং পদ্ধতি, আমদানি শুল্কে সংষ্কার আনা ইত্যাদি।
ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) জি এন সিংহ টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, “দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাক এটা কনওই চায় না ভারত। তবে যে সব বিদেশি সংস্থা ভাল মানের ওষুধ সরবরাহ করছে না, অথচ সস্তা দামের ফায়দা নিচ্ছে, চিন্তাভাবনা চলছে সেগুলোকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কারণ এ ধরনের সংস্থাগুলোর জন্য দেশের রোগী ও সংস্থাগুলোর ক্ষতি হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে দেশীয় ওষুধ শিল্পেরও।”
আরও পড়ুন: নিজের জন্মস্থানে গিয়ে আবেগে ভাসলেন প্রধানমন্ত্রী
চিনের উপর ওষুধের নির্ভরশীলতা কমাতে গেলে দেশীয় ওষুধশিল্পকে চাঙ্গা করাটাই সবার আগে দরকার। কিন্তু প্রতিযোগিতার বাজারে সস্তা দামে টেক্কা দিয়ে যাচ্ছে চিন। এ দেশে ওষুধের কাঁচামাল তৈরি করতে যা খরচ হয়, তার থেকে ১৫-২০% কম দামে চিনা কাঁচামাল পৌঁছে যায় ভারতের মাটিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই কম খরচের কারণেই দেশীয় ওষুধ সংস্থাগুলো চিনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। আমদানি ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা আনা এবং দেশীয় উত্পাদনকে সুযোগসুবিধা দেওয়া- এই দুই নীতির উপর দাঁড়িয়েই এগোতে চাইছে কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy