পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট অচল হয়ে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করার পরেই কালো টাকার কারবারিরা গয়নার দোকানে ছুটেছিলেন, যাতে গয়না কিনে ওই কালো টাকার গতি করা যায়। এমনটাই জানা গিয়েছিল আয়কর দফতর সূত্রে। খবর পেয়ে আয়কর দফতর হানাও দিয়েছিল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। আজ তারা জানাল, এখনও পর্যন্ত ১৩০ কোটি টাকার নগদ ও গয়না আটক করা হয়েছে। তল্লাশির সময়ে সন্ধান মিলেছে আরও ২০০০ কোটি টাকা মূল্যের নগদ ও সম্পত্তির। যা করফাঁকি দেওয়া গোপন আয় বলে স্বীকার করে নিয়েছেন সেগুলির মালিকরাই।
গত ৮ নভেম্বর কেন্দ্র বড় নোট বাতিলের পর থেকে আয়কর দফতর ৪০০টিরও বেশি মামলার দ্রুতগতিতে তদন্ত শুরু করেছে। তবে এর মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, আটক করা কালো টাকা বা সম্পত্তি শুধুমাত্র কর ফাঁকির অর্থ নয়। এই টাকার উৎস নিয়েও তদন্ত করা দরকার। এই ধরনের ৩০টি মামলা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ও সিবিআইয়ের কাছেও পাঠানো হচ্ছে।
তল্লাশির খতিয়ান
• ২,০০০ কোটি টাকার গোপন আয় ফাঁস
• আটক ১৩০ কোটি টাকার নগদ ও অলঙ্কার
• তদন্তের জালে ৪০০-র বেশি মামলা
• ইডি, সিবিআইয়ের হাতে ৩০টি মামলা
আয়কর দফতরের হিসেব অনুযায়ী, সব থেকে বেশি সন্দেহজনক মামলার সন্ধান মিলেছে বেঙ্গালুরু থেকে। দিন চারেক আগে এই বেঙ্গালুরুতেই এক ঠিকাদারের বাড়িতে তল্লাশির পরে নতুন ২০০০ টাকার নোটে ৪.৭ কোটি টাকা উদ্ধার করেছিল আয়কর দফতর। পুরনো নোটে মিলেছিল আরও ৩০ লক্ষ। সঙ্গে ছিল ৭ কিলোগ্রাম ওজনের সোনার বার। বাজারে যখন নতুন নোটের হাহাকার, সে সময়ে ২০০০ টাকার নোটে এত টাকা একজনের ঘরে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন আয়কর-কর্তারা। এই ধরনের ১৮টি মামলা ইডি-কে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
মুম্বইয়েও একই ভাবে নতুন নোটে ৮০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। লুধিয়ানার একটি জায়গায় তল্লাশিতে ১৪ হাজার মার্কিন ডলার এবং ভারতীয় মুদ্রায় ৭২ লক্ষ টাকা মিলেছিল। হায়দরাবাদে একটি গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৯৫ লক্ষ টাকা মেলে। পুণের একটি সমবায় ব্যাঙ্কের মালিকানাবিহীন লকার থেকে ২০ লক্ষ টাকা মিলেছে। যার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা ছিল নতুন নোটে। এরও তদন্ত করতে বলা হয়েছে ইডি-কে।
অর্থ মন্ত্রকের অভিযোগ, পুরনো নোট বাতিলের পরে অনেক ব্যাঙ্ককর্মীও কালো টাকা সাদা করার ‘কাজ’ করছেন। গত কাল দিল্লিতে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের দুই পদস্থ অফিসারকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। সোনার বারের বিনিময়ে তাঁরা কালো টাকা সাদা করতে হাত লাগিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ইডি এই মামলারও তদন্ত করছে। আয়কর দফতরের দাবি, নোট বাতিলের পরেও অনেক অলঙ্কার ব্যবসায়ী পুরনো নোট নিয়ে গয়না বিক্রি করেছেন। আগের তারিখে বিল তৈরি হয়েছে। প্যান সংক্রান্ত তথ্য দাখিলের নিয়মও মানা হয়নি। মধ্যপ্রদেশের ভোপালের মতো জায়গা থেকে এই ধরনের বেশ কিছু মামলার তদন্তও শুরু করেছে ইডি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy