তিন দিনের সফরে দিল্লি পৌঁছে প্রথম সন্ধ্যাতেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেন ব্রাজ়িলের ডেপুটি প্রেসিডেন্ট তথা শিল্প বাণিজ্য ও পরিষেবা বিষয়কমন্ত্রী জেরালদো আল্কমিন। আগামিকাল বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে বাণিজ্য পর্যালোচনা বিষয়ক বৈঠক করবেন তিনি।
আজ রাজনাথ-আল্কমিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ব্রাজ়িলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হোসে মুচিয়ো মন্তেইরো ফিলো। তিনিও এসেছেন আল্কমিনের প্রতিনিধি দলে। ব্রাজ়িলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “দু’দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সমঝোতাপত্র নিয়ে কাজ চলছে। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন, উন্নয়ন, বাণিজ্য বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারিত করা হবে ওই চুক্তির মাধ্যমে।” প্রসঙ্গত, আগামী মাসে ব্রাজ়িলের স্যান্টোসে দু’দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা বৈঠক হবে। সেখানে প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখার সুযোগ হবে বলে জানিয়েছেন মুচিয়ো। যৌথ উৎপাদন, রক্ষণাবেক্ষণ, গবেষণার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানো হবে। ব্রাজ়িলের তরফে জানানো হয়েছে, মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রেও ভারতের থেকে পরামর্শ চায় তারা।
কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, আমেরিকার শুল্কবাণে একই ভাবে আহত ভারত এবং ব্রাজ়িল — ব্রিকস-এর দুই সদস্য রাষ্ট্র। আর সেই যৌথ ক্ষতির জায়গা থেকে উভয়ে বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একে অপরের হাত ধরতে চায় বলে মনে করা হচ্ছে। লক্ষ্য, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বর্তমানে যা রয়েছে (১২ বিলিয়ন ডলার) তার তিন গুণ করা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির ফলে দুই দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি অন্তত ১ শতাংশ কমে যেতে পারে। এই অবস্থায় ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্ট লুইজ় ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে তৈরি হওয়া নতুন কৌশলগত বন্ধুত্ব আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পুনর্গঠনের এক দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে।
জেরালদোর প্রতিনিধি দলে রয়েছেন তেল সংস্থা পেট্রোব্রাস, খনিজ সংস্থা ভালে এসএ, এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের শীর্ষ আধিকারিকেরা। তাঁরা ভারতেরকৃষি, জৈব জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা খাতে অংশীদারি গড়ার বিষয়ে আলোচনা করবেন। এ দিকে, ব্রাজ়িল ইতিমধ্যেই তাদের কিছু রফতানি আর্জেন্টিনা এবং চিনে সরিয়ে দিয়েছে।পাশাপাশি, সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে তাদের কাছে উঠে আসছে ভারত। সূত্রের খবর, ভারতীয় বাজারে কফি ও ইথানল রফতানির বাড়াতে আগ্রহী ব্রাজ়িল। ব্রাজ়িলিয়ানবাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংস্থা ‘এপেক্স ব্রাজ়িল’-এর প্রধান জর্জ ভিয়ানা বলেন, “ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আগামী দিনে সবচেয়ে দ্রুত বাড়বে — আমেরিকার শুল্কতোপের পরেও।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)