আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তাড়নায় চিনের সঙ্গে সম্পর্কের গতি বাড়াতে মরিয়া নয়াদিল্লি। এ মাসের শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে চিন সফরে গেলে তা আরও বড় করে দেখানো হবে বলেই মনে করেছে কূটনৈতিক মহল। কিন্তু তা করতে গিয়ে সীমান্ত সংক্রান্ত অবস্থানে সমঝোতা করতে দেখা যাচ্ছে ভারতকে।
গতকাল চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের বৈঠকের পরে রাতে বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সীমান্ত সংক্রান্ত জটিলতা মেটাতে ‘আর্লি হার্ভেস্ট’ নীতির পথে হাঁটবে নয়াদিল্লি। অর্থাৎ ভারত-চিন সীমান্তের তিনটি সেক্টর পশ্চিম (লাদাখ), মধ্য (উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল) এবং পূর্বের (সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ) মধ্যে যেখানে পরিস্থিতি সহজ, সেখানে আগে ‘ফসল কাটা হবে’ অর্থাৎ সীমান্ত নির্ধারণ করা হবে। অথচ ২০০৫ সালের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী শর্ত ছিল— পশ্চিম, মধ্য ও পূর্ব, সব ক’টি ক্ষেত্রকে অন্তর্ভুক্ত করে, একসঙ্গে সীমানা নিষ্পত্তি চূড়ান্ত হবে। ২০১৯-এও চিনের পক্ষ থেকে সুবিধাজনক ক্ষেত্রে ‘ফসল কাটার’ প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল ভারত।
কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, কোনও ক্ষেত্র সীমান্ত নির্ধারণ করার উপযুক্ত কি না তা চিন নিজের শর্তে তৈরি করে নেয় স্থিতাবস্থার পরিবর্তন করে, নতুন স্থিতাবস্থা তৈরি করে। পশ্চিমে লাদাখে ভারতীয় সেনা টহলদারির ভূখণ্ড খুইয়ে বসে রয়েছে এবং ‘বাফার জ়োন’গুলিকে ওই নতুন স্থিতাবস্থা হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে। ২০০৫-এর চুক্তিতে বলা হয়েছে, সীমান্তে জনবসতি স্থানচ্যুত করা যাবে না। আর চিন দীর্ঘ দিন ধরেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অরুণাচল প্রদেশে বহু গ্রামের নাম তাদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে চিনা নাম দিয়ে রেখেছে। ওই এলাকায় সীমান্ত নির্ধারণের প্রশ্ন এলে চিন দেখাবে, তাদের জনগণকে সরানো চলবে না। চিন চাইছে সিকিমের সীমানা নির্ধারণ আগে সেরে ফেলতে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)