আলোচনায় উত্তাপ কমার সম্ভাবনা কম দেখে লাদাখে আসন্ন শীতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা মোতায়েন ও তাদের জন্য শীতের উপযোগী সামগ্রী পাঠানোর কাজ শুরু করে দিল ভারত। সেনা সূত্রের মতে, সাম্প্রতিক অতীতে শীতের সময় লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা উন্মুক্ত থাকলেও এ বারে আর তা রাখা হবে না। সেনা সূত্রের আশঙ্কা, আসন্ন শীতের কারণে ভারতীয় সেনা যদি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে পিছিয়ে যায়, তা হলে চিনা সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় কৌশলগত অবস্থানগুলি দখল করে নেবে নিশ্চিত। বিশেষ করে সীমান্তে গত ৪৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম যে ভাবে চিনা সেনা একশো থেকে দু’শো রাউন্ড গুলি চালিয়েছে, তার পরে আর ঝুঁকি নিতে রাজি নয় ভারত।
সেনা সূত্রে বলা হয়েছে, লাদাখে গত ২৯ অগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চিনা সেনা অন্তত চার বার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছে এসে পড়ে। সূত্রের মতে, এর মধ্যে দু’দেশের বিদেশ মন্ত্রক পর্যায়ের বৈঠকের আগে সেনা চৌকি দখল করতে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষুব্ধ চিনা সেনারা ভারতীয় বাহিনীকে ভয় দেখাতে প্রায় একশো থেকে দু’শো রাউন্ড গুলি ছোড়ে। সেনা সূত্রের মতে, ওই ঘটনাটি ঘটেছে প্যাংগং হ্রদের উত্তর প্রান্তে থাকা গিরিশিখর ফিঙ্গার ৪-এর কাছে। ওই এলাকায় গত মাসের শেষ সপ্তাহে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চূড়া নিজেদের দখলে নিয়েছিল ভারতীয় সেনা। ফলে ওই এলাকায় চিনা সেনার গতিবিধি নজর রাখায় সুবিধা হয় ভারতের।
ভারতীয় সেনার এ ভাবে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলাটা আদৌ পছন্দ হয়নি চিনের। তাই গত বৃহস্পতিবার মস্কোয় দু’দেশের বিদেশ মন্ত্রক স্তরের বৈঠকের আগেই ওই এলাকা থেকে ভারতীয়দের হটিয়ে দিতে তৎপর হয় তারা। ঘটনার দিন প্রচুর চিনা সেনা ভারতীয় সেনার অবস্থান লক্ষ্য করে এগোতে থাকে। ভারতীয় সেনারা তৎপর ও সতর্ক থাকায় ফিরে যেতে বাধ্য হয় চিন। সূত্রের মতে, ফেরার আগে ভয় দেখাতে প্রায় একশো থেকে দু’শো রাউন্ড গুলি আকাশে ছোড়ে তারা। যদিও ভারতের পক্ষে কেউ আহত হয়নি।