ভারতের নাকের ডগায় তিব্বতে ইয়ার্লুং সাংপো (তিব্বতি ভাষায় ব্রহ্মপুত্র যে নামে পরিচিত) নদের নিম্ন উপত্যকায় বাঁধ তৈরি করছে চিন। ভারত সীমান্তের অনতিদূরে তৈরি হওয়া এই বাঁধ নিয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র কাছে তাঁর সদ্যসমাপ্ত নয়াদিল্লি সফরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। পাশাপাশি, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসে পাকিস্তানের ভূমিকার কথাও বিশদে তুলে ধরা হয়েছে। রাজ্যসভায় একটি প্রশ্নের লিখিত উত্তরে গতকাল এ কথা জানিয়েছেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ।
তিব্বতের ইয়ার্লুং সাংপো নদ অরুণাচল প্রদেশে সিয়াং নামে পরিচিত। সিয়াং আরও নীচে নেমে অসমে নাম নিয়েছে ব্রহ্মপুত্র। ভারতের আপত্তি উড়িয়ে ২০১৫ সাল থেকে ওই নদীতে চিনা নির্মাণের কাজ চলছে। অভিযোগ, এর ফলে ক্রমশইজলস্তর কমছে। অদূর ভবিষ্যতে অসম, অরুণাচল-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে জলসঙ্কট দেখা দিতে পারে মনে করছেন পরিবেশবিদদের একাংশ। বিদেশপ্রতিমন্ত্রীর কথায়, “চিনের বিদেশমন্ত্রীর সফরে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছি।” ভারত নিম্ন অববাহিকায় অবস্থিত। তাই জনজীবন সুরক্ষিত রাখতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।
চিন ব্রহ্মপুত্রের বাঁকে বাঁধটি তৈরি করছে। ফলে ব্রহ্মপুত্রের জল ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে তারা। এই বাঁধ ব্রহ্মপুত্রের স্বাভাবিক প্রবাহকে রুখে দিয়ে বর্ষায় উজানের দিকে আরও জল ঠেলে দিতে পারে, আবার শুখা মরসুমে জলের অভাবও দেখা যেতে পারে। তা ছাড়া, ভূতাত্ত্বিক দিক থেকে ব্রহ্মপুত্র দু’টি পাতের সংযোগস্থলে অবস্থিত। ফলে স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে কৃত্রিম উপায়ে বাধা দেওয়া হলে ভূমিকম্পের আশঙ্কাও থেকে যায়।
পাশাপাশি, বিদেশ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তানের ভূমিকা চিনা বিদেশমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হয়েছে। ভারত সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে যে সন্ত্রাসবাদের প্রচারক পাকিস্তানের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের শিকার ভারতকে এক বন্ধনীতে রাখাচলে না।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)