ছবি: এএফপি।
খরা, বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়! এই ত্র্যহস্পর্শেই জলবায়ু বদলজনিত বিপদের আশঙ্কায় বিশ্বে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে ভারত। বুধবার একটি জার্মান পরিবেশ গবেষণা সংস্থার প্রকাশিত সমীক্ষা রিপোর্টে এ কথা জানিয়েছেন পরিবেশবিদেরা। ২০১৮ সালে বিশ্বে যে-ধরনের জলবায়ুগত বিপর্যয় হয়েছে, তার নিরিখেই এই তালিকা প্রকাশ করেছে ওই সংস্থা। তালিকার শীর্ষ স্থানে রয়েছে জাপান।
ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ভারতের অনেক জায়গাই প্রবল তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছিল। অতিবৃষ্টিতে বিপর্যয় ঘটে কেরলে। আবার ঘূর্ণিঝড় গজ ও তিতলির দাপটে পূর্ব উপকূল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলবায়ুগত বিপর্যয়ে মৃত্যুর দিক থেকে ভারত এক নম্বরে। আর্থিক ক্ষতির দিক থেকে তার স্থান দ্বিতীয়। এই সব তথ্যের নিরিখেই জলবায়ুর পরিবর্তনগত ঝুঁকি-সূচিতে ভারত পঞ্চম স্থানে রয়েছে বলে জানাচ্ছেন পরিবেশবিদেরা। তাই তাঁরা ভারতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। ২০১৭ সালে এই সমীক্ষায় ভারত ছিল চতুর্দশ স্থানে। এক বছরে সে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। যারা সমীক্ষা চালিয়েছে, সেই জার্মান সংস্থার অন্যতম শীর্ষ কর্তা ডেভিড একস্টেইন বলেন, ‘‘কেরলের বন্যা চলতি শতাব্দীর অন্যতম ভয়ঙ্কর বিপর্যয়। ঘূর্ণিঝড়েও প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খরাও বাদ যায়নি ভারতে। সব মিলিয়ে দেখেই তালিকায় পঞ্চম স্থান দেওয়া হয়েছে ভারতকে।’’
ভারতের ক্ষেত্রে এই সব প্রাকৃতিক প্রবণতা দীর্ঘ সময় দেখা যাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন পরিবেশবিদেরা। জার্মান সংস্থাটি ১৯৯৯ সাল থেকে দীর্ঘমেয়াদি তথ্য নিয়ে যে-সমীক্ষা চালিয়েছে, তাতেও প্রথম দশে নেই ভারত। কিন্তু পরিবেশবিদেরা বলছেন, যে-ভাবে জলবায়ু বদলের ইঙ্গিত মিলছে, তাতে আগামী দিনে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দাপট বাড়তে পারে। বস্তুত, চলতি বছরে আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর মিলিয়ে মোট সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এ বার শীতের চরিত্রেও বদল দেখা যাবে বলে জানিয়েছে দিল্লির মৌসম ভবন। যার পিছনে সাগরের উষ্ণায়নকেই দায়ী করছেন পরিবেশবিদেরা। উষ্ণায়নে এ বার বর্ষাও ছন্দ হারায়। এ-সব থেকেই জলবায়ু বদলের ইঙ্গিত প্রকট হচ্ছে বলেও দাবি পরিবেশ বিজ্ঞানীদের।
আরও পড়ুন: জামিনে মুক্ত ‘বিদেশি’-কে ফের নোটিস
কয়েক বছর ধরেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবল তাপপ্রবাহ দেখা গিয়েছে। শতাব্দীর যাবতীয় রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে সেই তাপপ্রবাহ। এর পিছনে সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন ওই জার্মান সংস্থার গবেষকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, জলবায়ুগত বিপর্যয়ে যে-ভাবে প্রাণহানি ও সম্পত্তির ক্ষতি হচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও চিন্তার কারণ। চলতি মাসে মাদ্রিদে যে-জলবায়ু সম্মেলন হবে, সেখানেও জলবায়ু বিপর্যয়ের কবলে পড়া দেশ ও বাসিন্দাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ অন্যতম আলোচ্য হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy