Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Migrant Labourer

মোরাদাবাদ থেকে হেঁটে গৃহপানে বঙ্গ-শ্রমিক

তিন জন থাকেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে। চার জন থাকেন হাওড়ার আমতায়।

পিটিআই-এর প্রতীকী ছবি।

পিটিআই-এর প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২০ ০৫:২১
Share: Save:

ফোস্কা পড়া পা আর পিঠের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়েই এক নাগাড়ে হেঁটেছেন পশ্চিমবঙ্গের সাত পরিযায়ী শ্রমিক। উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ থেকে হাঁটা শুরু করে ১০ দিনে পৌঁছেছেন পটনায়। শরীর-মন আর চলছে না বলে সোমবার ফোনে জানালেন সৈফুদ্দিন, আলমগির, আজহার খান।

তিন জন থাকেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে। চার জন থাকেন হাওড়ার আমতায়। সৈফুদ্দিন ফোনে বলেন, “খাবার কেনার পয়সাটুকুও নেই। রাস্তায় কেউ খেতে দিলে খাচ্ছি। না-হলে খালি পেটেই হাঁটছি।”

সৈফুদ্দিনের সঙ্গী আলমগির, আজহারেরা জানান, উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে একটি গাড়ির গ্যারাজের মিস্ত্রি হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন চলতি বছরের মার্চের গোড়ায়। আলমগির বলেন, “২৬ তারিখ থেকে কাজ বন্ধ হয়ে গেল। এক মাসও কাজ করিনি। তাই মাইনেও পাইনি।”

আরও পড়ুন: কন্টেনমেন্ট এলাকা বন্ধ, অন্যত্র দোকান খোলা ১০-৬টা

সৈফুদ্দিনেরা জানান, কাজ বন্ধ হয় গেলেও লকডাউন উঠে যাওয়ার আশায় এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত মোরাদাবাদেই ছিলেন। মার্চের ঘরভাড়া কোনও ভাবে দিতে পারলেও এপ্রিলের ভাড়া দেওয়ার টাকা ছিল না কারও কাছে।

এ দিন সকালে পটনার বাইপাস মোড়ে পৌঁছন ওই পরিযায়ী শ্রমিকেরা। সৈফুদ্দিন বলেন, “স্ত্রী আর সন্তানের কথা ভেবেই এত দিন হেঁটেছি। এখন সেই মনের জোরটাও হারিয়ে যাচ্ছে। গত দু’দিন বিস্কুট খেয়ে হেঁটেছি।” তাঁদের অভিযোগ, সরকারের টোল ফ্রি হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করেও কাউকে পাওয়া যায় না।

আরও পড়ুন: মালিকদের চাপেই কি শ্রমিক ফেরাতে অনীহা

রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘এখন ৬০টি হেল্পলাইন রয়েছে। কিন্তু তিন লক্ষ মানুষ ফোন করলে লাইন পেতে অসুবিধা হবেই। সেই জন্য সরকারের ওয়েবসাইটে নজর রাখতে বলা হয়েছে।’’

রাজ্য সরকার জানিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে। স্টেশন বা বাস যেখানে থামবে, সেখানে স্বাস্থ্যপরীক্ষা হবে। কোনও উপসর্গ না-থাকলে তিন সপ্তাহের ওষুধ দিয়ে খাওয়ার নিয়ম জানিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। লক্ষণ থাকলে সংগ্রহ করা হবে লালারস। সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে কোয়রান্টিন না আইসোলেশন, কোথায় পাঠানো হবে, সিদ্ধান্ত নেবে জেলা প্রশাসন।

স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এ রাজ্য থেকে যাঁরা অন্য রাজ্যে ফিরবেন, সেই শ্রমিকদের জন্য ‘এগজ়ি অ্যাপ’ চালু করা হয়েছে। সেখানে আবেদন করলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ‘পাস’ মিলবে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Labourer India Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE