জম্মু ও কাশ্মীরের রমবান জেলায় চন্দ্রভাগা নদীর উপর বাঁধ দিয়ে জল আটকাল ভারত। পাকিস্তানমুখী ওই জলপ্রবাহের উপর রয়েছে বাগলিহার বাঁধ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই রবিবার সূত্র উল্লেখ করে জানিয়েছে, বাগলিহার বাঁধের মাধ্যমে চন্দ্রভাগার জল আটকেছে ভারত। একই পরিকল্পনা রয়েছে বিতস্তা নদীর উপর কিশনগঙ্গা বাঁধ নিয়েও। তবে সেই পরিকল্পনা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
রমবানের বাগলিহার এবং উত্তর কাশ্মীরের কিশনগঙ্গা বাঁধের মাধ্যমে পশ্চিমমুখী জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ভারত। কখন জল আটকানো হবে, কখন ছাড়া হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে নয়াদিল্লি। কাশ্মীরে সিন্ধু এবং তাঁর উপনদীগুলির জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশেই এই চুক্তির উপর নির্ভরশীল। সিন্ধু, চন্দ্রভাগা এবং বিতস্তার জল পাকিস্তানের দিকে বয়ে যায়। ভারত চুক্তির শর্ত না-মানলে ইচ্ছামতো জলপ্রবাহ আটকে দিতে পারে বা বাড়তি জল ছাড়তে পারে। দুই ক্ষেত্রেই পাকিস্তানে সঙ্কট তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
-
কথা বলেই পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্যা মেটান! ইউক্রেনে ৩৯ মাস যুদ্ধ চালানো রাশিয়াও এ বার পরামর্শ দিল ভারতকে
-
নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে আরও এক পদক্ষেপ! ভারত বাণিজ্য বন্ধ করার পর রাতেই বিবৃতি দিল পাকিস্তানের জাহাজ মন্ত্রক
-
মোদীর সফরে পর্যটকদের উপর হামলার শঙ্কা! খবর পেয়ে টানা নজরদারি চালান খোদ ডিজিপি, ব্যর্থতা শুধু দু’টি তথ্যের ভুলে
কিছু দিন আগে বিতস্তার জল ছেড়েছিল ভারত। তাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। অভিযোগ, ভারত না জানিয়ে কোনও সতর্কবার্তা ছাড়াই জল ছেড়েছে। ফলে নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সময় পাননি। অবশ্য একটি অংশের দাবি ছিল, নিয়ম মেনেই জল ছাড়া হয়েছে।
চন্দ্রভাগা নদীর উপর ভারতের বাগলিহার বাঁধ দীর্ঘ দিন ধরেই দুই দেশের বিরোধের অন্যতম কারণ। অতীতে এ বিষয়ে বিশ্বব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপও চেয়েছিল পাকিস্তান। অভিযোগ ছিল, এই বাঁধ তৈরি করে পাকিস্তানের জল আটকাতে চায় ভারত। সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের পর সেই বাঁধ দিয়েই জল আটকানো হল। তবে কত ক্ষণের জন্য এই জল আটকানো হয়েছে, ভবিষ্যতে কী ভাবে এই বাঁধ ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে নয়াদিল্লির, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। তাতে মৃত্যু হয় ২৬ জনের। সেই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের পাশাপাশি ভারতে পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল, আকাশসীমা বন্ধ, আমদানি বন্ধ করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য থমকে গিয়েছে। পাকিস্তান প্রথম থেকেই পহেলগাঁও কাণ্ডের সঙ্গে যোগ অস্বীকার করে এসেছে।