নিয়ন্ত্রণ রেখায় তৎপর ভারতীয় বাহিনী। —ফাইল চিত্র।
নিয়ন্ত্রণ রেখা ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র গোলাগুলি বিনিময়ে অন্তত ১৫ পাক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। জানাল ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। গত কাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারও ভারতীয় গোলাবর্ষণে এক পাক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। জখম আরও এক জন। পাক হামলায় গত কাল এক বিএসএফ জওয়ানেরও মৃত্যু হয়েছে।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর পর থেকেই নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ঘন ঘন সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান। বিনা প্ররোচনায় নিয়ন্ত্রণ রেখার ও পার থেকে গোলাবর্ষণ হচ্ছে। ভারতীয় বাহিনী অবশ্য প্রতিটি সেক্টরেই তার যোগ্য জবাব দিচ্ছে। পাক গোলায় এ পর্যন্ত ভারতীয় বাহিনীর চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এক সাধারণ নাগরিকও প্রাণ হারিয়েছেন। জখমের সংখ্যা ৩৪। নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাকিস্তানের এই অনর্গল সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন প্রসঙ্গে বিএসএফ-এর এডিজি অরুণ কুমার শুক্রবার জানিয়েছেন, পাকিস্তানের প্রতিটি হামলারই যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর থেকে আজ পর্যন্ত ভারতের পাল্টা গোলাবর্ষণে পাকিস্তানের অন্তত ১৫ জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন বলে অরুণ কুমার জানিয়েছেন।
পাক গোলায় বিধ্বস্ত বাড়ি। জম্মুতে। ছবি: পিটিআই।
বিএসএফ সূত্রের খবর, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক পরবর্তী পরিস্থিতিতে পাক রেঞ্জার্স সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি খেয়েছে ২১ অক্টোবর। বিনা প্ররোচনায় পাকিস্তানের দিক থেকে সে দিনও গোলাবর্ষণ শুরু হয়েছিল বলে বিএসএফ-এর দাবি। কাঠুয়ার হীরানগর সেক্টরে পাক গোলায় এক বিএসএফ জওয়ান সে দিন জখম হন। তার পর ভারতীয় বাহিনীও ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করে। তাতে পাকিস্তানের অন্তত ৭ জওয়ানের মৃত্যু হয় বলে বিএসএফ সূত্রের খবর। ২৫ অক্টোবর রাজৌরি জেলার নওশেরা সেক্টর লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ শুরু করেছিল পাকিস্তান। ভারত পাল্টা জবাব দিতে শুরু করে। তাতেও পাক সেনার অন্তত তিন জওয়ানের মৃত্যু হয় বলে খবর।
নিয়ন্ত্রণ রেখার ও পার থেকে ছুটে আসা মর্টারের শেল দেখাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: পিটিআই।
বৃহস্পতিবার থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখায় সংঘর্ষের মাত্রা আচমকা বেড়ে গিয়েছে। জম্মু, কাঠুয়া এবং রাজৌরি জেলায় ভারতের পাঁচটি সেক্টর লক্ষ্য করে পাকিস্তান প্রবল গোলাবর্ষণ শুরু করেছিল। তাতে এক বিএসএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়। জখম হন ১৩ জন সাধারণ নাগরিক। ভারতের পাল্টা হামলায় পাক রেঞ্জার্সের এক জওয়ানের মৃত্যু হয়, এক জন জখম হন। আজ, শুক্রবার সকালেও নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পরিস্থিতি একই রকম। জম্মু এবং রাজৌরি জেলার সুন্দরবানি, পালানওয়ালা এবং নওশেরা সেক্টর লক্ষ্য করে সবচেয়ে বেশি গোলাবর্ষণ করছে পাকিস্তান। বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র, ৮২ এমএম মর্টার এবং ১২০ এমএম মর্টার ব্যবহার করে হামলা চালানো হচ্ছে। বিএসএফ-এর এক মুখপাত্র শুক্রবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, প্রতিটি পাক হামলারই যোগ্য জবাব দিচ্ছে ভারত। ভারতের পাল্টা জবাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি গ্রাম বিপুল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং পাক বাহিনীর বেশ কয়েকটি সীমান্ত চৌকি গুঁড়িয়ে গিয়েছে বলেও বিএসএফ মুখপাত্র জানিয়েছেন। বাহিনীর এডিজি অরুণ কুমার বলেছেন, ‘‘আমরা কখনোই সাধারণ নাগরিকদের উপর আক্রমণ চালাব না। কিন্তু পাকিস্তান যদি আমাদের উপর হামলা চালায়, আমরা অবশ্যই তার যোগ্য জবাব দেব।’’
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে ব্রিটেনের ধাক্কা পাকিস্তানকে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy