Advertisement
E-Paper

পরমাণু হামলা হলে আরও ভয়ঙ্কর পাল্টা আঘাতের জন্য প্রস্তুত ভারত

নীতিগতভাবে পরমাণু যুদ্ধের বিপক্ষে নয়াদিল্লি। নিজে পরমাণু বোমায় আক্রান্ত না হলে ভারত কোনও দেশে পরমাণু হামলা চালাবে না— ঘোষিত অবস্থান নয়াদিল্লির। কিন্তু প্রতিপক্ষ পরমাণু হামলা চালালে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। সে কথাও আন্তর্জাতিক মহলকে জানিয়ে রেখেছে ভারত।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৬:৫৪

নীতিগতভাবে পরমাণু যুদ্ধের বিপক্ষে নয়াদিল্লি। নিজে পরমাণু বোমায় আক্রান্ত না হলে ভারত কোনও দেশে পরমাণু হামলা চালাবে না— ঘোষিত অবস্থান নয়াদিল্লির। কিন্তু প্রতিপক্ষ পরমাণু হামলা চালালে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। সে কথাও আন্তর্জাতিক মহলকে জানিয়ে রেখেছে ভারত। এই নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ডুবোজাহাজ থেকে পরমাণু হামলা চালানোর ব্যবস্থা গড়ে তুলছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

হিরোশিমা-নাগাসাকির যুগ এখন অতীত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মার্কিন বোমারু বিমান জাপানের দুই শহরে যে বোমা পেলেছিল, তা আজকের যুগে নেহাতই শিশু। অনেক আধুনিক হয়েছে প্রযুক্তি। অনেক বেশি ক্ষমতাশালী, আরও অনেক বিধ্বংসী ও ভয়ঙ্কর হাইড্রোজেন বোমা এখন মজুত পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির অস্ত্রাগারে। আধুনিক যুদ্ধের বিশেষজ্ঞদের কথায়, এখনকার যুদ্ধে কোনও দেশ তার প্রতিপক্ষের উপর পরমাণু হামলা চালালে তার অভিঘাত এত মারাত্মক হয় যে আক্রান্তের পক্ষে ঘুরে দাঁড়িয়ে পাল্টা হামলা চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, যে দেশ পরমাণু অস্ত্রে আক্রান্ত হয়েও পাল্টা আঘাত হানার ক্ষমতা রাখে, তাকেই প্রকৃতপক্ষে পরমাণু যুদ্ধের যোগ্য বলে মনে করা হয়।

ভারত ঠিক এই ভাবেই পরমাণু যুদ্ধের উপযুক্ত হয়ে উঠছে। অর্থাৎ, যুদ্ধের সময় প্রতিপক্ষ দেশ ভারতে পরমাণু হামলা চালালে সঙ্গে সঙ্গে উপযুক্ত জবাব যাতে দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থা তৈরি রাখছে ভারত। সামরিক পরিভাষায় এই ব্যবস্থাকে বলা হয় ‘সেকেন্ড নিউক্লিয়ার অ্যাটাক ক্যাপাবিলিটি’। মুখে বলা যত সহজ, বাস্তবে এই সেকেন্ড অ্যাটাক কিন্তু ততটাই কঠিন। পরমাণু হামলা যখন কোনও দেশ চালায়, তখন বিপক্ষের স্থলসীমায় সব পরমাণু পরিকাঠামোকে অকেজো করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই হামলা চালায়। ভারতের যা প্রস্তুতি, তাতে সে রকম ভয়ঙ্কর আক্রমণের মুখে পড়লেও, পাল্টা জবাব দেওয়া সম্ভব হবে। প্রথমে কারওর উপর পরমাণু হামলা না চালানো বা ‘নো ফার্স্ট অ্যাটাক’ নীতির বাখ্যা দিতে গিয়েও ভারত সরকার সেই বার্তা আন্তর্জাতিক মহলকে দিয়ে রেখেছে। ভারতের তরফে বলা হয়েছে, প্রথমে কাউকে পরমাণু অস্ত্রে আঘাত করবে না ভারতীয় বাহিনী। কিন্তু কেউ ভারতের উপর পরমাণু হামলা চালালে, সেই দেশের উপর ভারত এত ভয়ঙ্কর আঘাত হানবে যে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে সেই দেশ মুছে যাবে।

এই নীতির রূপায়ণের জন্যই পরমাণু শক্তিধর ডুবোজাহাজ বা নিউক্লিয়ার সাবমেরিনের সংখ্যা বাড়াতে শুরু করেছে নয়াদিল্লি। নৌবাহিনীকে ওই ধরনের ডুবোজাহাজ চালানোর প্রশিক্ষণ দিতে আগেই রাশিয়া থেকে একটি নিউক্লিয়ার সাবমেরিন লিজ নেওয়া হয়েছিল। তার পর এ বছরই নৌবাহিনী হাতে পেয়েছে দেশে তৈরি নিউক্লিয়ার সাবমেরিন আইএনএস অরিহন্ত। ওই শ্রেণিরই আরও একটি ডুবোজাহাজ তৈরির কাজ শেষ পথে। তার নাম আইএনএস অরিদমন। এই সাবমেরিনগুলি থেকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে পরমাণু হামলা চালানো যায়। প্রতিটিতেই অনেকগুলি করে পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করা যায়। কোনও প্রতিপক্ষ ভারতের স্থলসীমায় পরমাণু হামলা চালালেও, সমুদ্রের গভীরে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে লুকিয়ে থাকা ভারতীয় নিউক্লিয়ার সাবমেরিনে আঘাত হানা প্রায় অসম্ভব। কারণ তাদের অবস্থানই নির্ণয় করা যায় না। তাই স্থলভাগে হামলা হলে সমুদ্র ফুঁড়ে পাল্টা ছুটে যাবে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র। সেনার ভাষায়, ভারতকে যারা বিধ্বস্ত করবে, উল্লাস করার জন্য তাদের দেশে যাতে কেউ অবশিষ্ট না থাকে, নিউক্লিয়ার সাবমেরিনগুলি তা নিশ্চিত করবে।

India Defence Nuclear war Second Attack Capability Nuclear Submarine MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy