ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বাণিজ্য একটা অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের হাতে এফ ৩৫ যুদ্ধবিমান তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সেই পথ আরও সুগম করলেন বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। শুধু এফ ৩৫ যুদ্ধবিমানই নয়, জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র-সহ বেশ কিছু অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম আরও বেশি করে ভারতকে বিক্রির প্রস্তাবও দিয়েছেন ট্রাম্প।
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করতে, বিশেষ করে আকাশসীমার নিরাপত্তা আরও দুর্ভেদ্য করতে অনেক দিন ধরেই এফ ৩৫ বিমানের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল ভারত। দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর গত জানুয়ারিতে এই যুদ্ধবিমান বিক্রির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকার সফর ঘিরে এফ ৩৫ নিয়ে আশার পারদ চড়ছিল। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকে অবশেষে ট্রাম্পের মুখে এফ ৩৫ নিয়ে আশার বাণী শোনা যেতেই পঞ্চম প্রজন্মের এই বিমান ঘিরে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
মোদীর আমেরিকা সফরে প্রতিরক্ষা বিষয়েও নজর ছিল চিন, রাশিয়া এবং পাকিস্তানের। আমেরিকা ভারতকে এফ ৩৫ দেয় কি না, সে দিকে নজর ছিল তাদের। পঞ্চম প্রজন্মের এফ ৩৫ স্টেল্থ যুদ্ধবিমান হাতে পেলে ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র অনেকটাই মজবুত হবে বলে আশা। কেন এই যুদ্ধবিমানকে নিয়ে এত প্রত্যাশা, এত উন্মাদনা? কী এর বৈশিষ্ট্য?
বিশ্বের অত্যাধুনিক বিমানগুলির মধ্যে একটি হল এফ ৩৫ যুদ্ধবিমান। এটি বহুক্ষমতাসম্পন্ন উন্নত যুদ্ধবিমানগুলির মধ্যে একটি। সব রকম প্রযুক্তিতে মোড়া এই বিমান। যে কোনও পরিস্থিতিতে লক্ষ্যবস্তুকে নিখুঁত নিশানা করার বিষয়ে এর জুড়ি মেলা ভার। শত্রুপক্ষের আকাশ প্রতিরক্ষাকে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই বিমানের। শুধু তা-ই নয়, রাডারে ধরা পড়ে না এই বিমান। ফলে নজর এড়িয়ে শত্রুপক্ষের ঘরে ঢুকে হামলা চালিয়ে আবার ফিরে আসতে পারে। শত্রুপক্ষের আকাশসীমায় ঢুকে গোপন তথ্যও সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে পারে এই বিমান। আর এই বৈশিষ্ট্যগুলিই এফ ৩৫-কে অন্য সব যুদ্ধবিমানের থেকে আলাদা করেছে। এফ ৩৫-এর তিনটি ভ্যারিয়ান্ট রয়েছে। এফ ৩৫এ, এফ৩৫বি এবং সি।
এফ ৩৫এ যুদ্ধবিমানের এক একটির দাম আট কোটি মার্কিন ডলার। এফ৩৫বি-এর একটির দাম সাড়ে ১১ কোটি মার্কিন ডলার এবং এফ ৩৫ সি ভ্যারিয়ান্টের একটির দাম ১১ কোটি মার্কিন ডলার। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন হওয়ায় এফ ৩৫ বিমানের এক ঘণ্টার উড়ানে খরচ হয় ৩৬ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৩১ লক্ষ ২৫ হাজার ৪৫৫ টাকা)।