Advertisement
E-Paper

দশ নেতাকে ডেকে চিনকে চাপ ভারতের

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটা অংশ মনে করছেন, ভুটান সীমান্তে চলতি যে স্নায়ুর লড়াই চলছে, তারই ভিত্তিতে ১০টি রাষ্ট্রকে আমন্ত্রণের এই অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু চলতি বিবাদের সঙ্গে আসিয়ান-রাজনীতির কতটা সম্পর্ক আছে, সেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ থেকেই যাচ্ছে— এমনটাও মনে করছেন সংশ্লিষ্ট শিবিরের অনেকেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৪
চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং।

চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং।

চিনে চাপের পাল্টা দিতে এ বার প্রজাতন্ত্র দিবসে নজিরবিহীন ভাবে ১০জন রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে নয়াদিল্লি। মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ১০জন নেতাই আসিয়ান-ভুক্ত দেশের।

সাধারণত প্রত্যেক বছর এক জন করে রাষ্ট্রপ্রধানকে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ করা হয়। সরকার সাধারণত তার কূটনৈতিক প্রয়োজনীয়তা অনুসারে প্রত্যেক বছর সেই দেশ বাছাই করে। বারাক ওবামা থেকে তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের মতো অনেকেই উপস্থিত থেকেছেন প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে। কিন্তু এক বারে ১০টি দেশকে এক সঙ্গে ডাকার এমন কী প্রয়োজনীয়তা তৈরি হল, স্বাভাবিক ভাবে সেই প্রশ্ন উঠছে। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, এই আমন্ত্রণ সরকারের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপিন্স, তাইল্যান্ড, ভিয়েতনামের মতো দেশগুলির সঙ্গে পূর্ব এশিয়ায় যে অক্ষ তৈরির কথা মোদী তিন বছর আগে ঘোষণা করেছিলেন, তা কাজে খুব একটা এগোয়নি। বিষয়টিকে আবার নতুন করে জিইয়ে তুলতে চাইছে নয়াদিল্লি। সম্প্রতি বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জানিয়েছেন, ভারত এবং আসিয়ানভুক্ত দেশ— উভয় পক্ষই নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব ধরনের চ্যালেঞ্জের শিকার। তাঁর কথায়, ‘‘দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য সব চেষ্টা করা হচ্ছে। এর আগের ‘পূবে তাকাও’ নীতিকে এগিয়ে নিয়ে আমরা ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ পলিসি তৈরি করেছিলাম।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘নৌ চলাচলের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি মান্যতার বিষয়টি খুবই প্রাসঙ্গিক। নৌ-সহযোগিতা বাড়ানোর প্রশ্নে আমরা আসিয়ানের প্রতি দায়বদ্ধ।’’

চিনের সঙ্গে দক্ষিণ চিনা সাগর নিয়ে বিবাদের ক্ষেত্রে যে দেশগুলিকে ঘোষিত ভাবে পাশে পেয়েছে ভারত, তার মধ্যে আসিয়ানভুক্ত অনেকগুলি দেশই রয়েছে। ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স এবং মালয়েশিয়া চিনের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছিল। এমনকী আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে চিনের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল ফিলিপিন্স। এটা ঘটনা যে চিন সাগরকে ঘিরে যতগুলি দেশ রয়েছে, তার অধিকাংশের সঙ্গেই জলসীমা নিয়ে চিনের বিরোধ রয়েছে। ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান, জাপান— সব ক’টি দেশের অধিকারই খর্ব হচ্ছে চিনা আগ্রাসনে। ফলে এই সমুদ্র রাজনীতিতে মিত্র দেশগুলিকে পাশে নিয়ে চিনের প্রতি পাল্টা চাপ তৈরি করাটাই এখন লক্ষ্য সাউথ ব্লকের।

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটা অংশ মনে করছেন, ভুটান সীমান্তে চলতি যে স্নায়ুর লড়াই চলছে, তারই ভিত্তিতে ১০টি রাষ্ট্রকে আমন্ত্রণের এই অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু চলতি বিবাদের সঙ্গে আসিয়ান-রাজনীতির কতটা সম্পর্ক আছে, সেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ থেকেই যাচ্ছে— এমনটাও মনে করছেন সংশ্লিষ্ট শিবিরের অনেকেই।

Republic Day celebrations Act East' policy China চিন Asean
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy