অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুশীলা কারকি আসনে বসার পরে নেপালের পরিস্থিতি আপাতত শান্ত। ঠিক এই সময়েই কাঠমাণ্ডুর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে নয়াদিল্লি। সূত্রের খবর, সরকার বিরোধী জেন জ়ি-র আন্দোলনের জেরে নেপালের ভেঙে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহ্যশালী ভবনগুলিকে মেরামত করতে এবং কিছু ক্ষেত্রে পুনর্নিমাণ করার দায়িত্ব নিতে চাইছে ভারত। সে দেশের নুইয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পাশে থাকার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে নয়াদিল্লির তরফে।
নেপালে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত নবীন শ্রীবাস্তব দেখা করেছেন সুশীলা কারকির সঙ্গে। অন্য কোনও দেশের রাষ্ট্রদূত যাওয়ার আগেই তিনি প্রথম রাষ্ট্রদূত হিসেবে সাক্ষাৎ সেরেছেন। তখনই তিনি কাঠমান্ডুর বিধ্বস্ত ভবনগুলি সংস্কারের প্রস্তাব দেন বলে সূত্রের খবর। আগামিকালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কারকির ফোনালাপ হওয়ার কথা। নেপালের সংসদ ভবন, সিংহ দরবারের মতো ঐতিহ্যবাহী ভবনগুলির দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু করতে চায় ভারত।
সূত্রের মতে, দেশের ছ'টি মেট্রো শহরের মধ্যে ৪টি— বিরাটনগর, বীরগঞ্জ, ভরতপুর, পোখরায় ব্যাপক হারে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। দেশের ২০০ থেকে ২৫০টি পুরসভা ক্ষতিগ্রস্ত। মদেশীয় এবং তরাই অঞ্চলও তছনছ হওয়ার খবর এসেছে। ২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ১৮টিসম্পূর্ণ ধ্বংস।
দেশের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় তিন লাখ কোটি নেপালি টাকার কাছাকাছি। যা নেপালের দেড় বছরের বাজেটের সমান। দেশের এই বছরের আর্থিক বৃদ্ধির হার ১ শতাংশের নীচে নেমে যাবে বলে আশঙ্কা বাণিজ্য মহলের। এই পরিস্থিতিতে চিনকে টেক্কা দিয়ে নয়াদিল্লি যদি নেপালের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে পারে, তা হলে প্রতিবেশী কূটনীতিতেতাদেরই লাভ।
কে পি শর্মা ওলি পুরোপুরি ভাবেই চিনের বন্ধু হিসেবে গত এক বছরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছিলেন। তিনি এক বারও ভারত সফরে আসেননি এই দফায়, যা নেপালের ঐতিহ্যবিরোধী। কিন্তু এ বারে নেপালের সামাজিক এবং কূটনৈতিক পরিসরে ভারত প্রভাব বাড়াতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক। আর সে কারণে এই পদক্ষেপগুলি করতে চেয়েছে নয়াদিল্লি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)