Advertisement
E-Paper

তিক্ততার জল গড়াবে কত দূর

আফ্রিকার দেশগুলির অভিযোগ খণ্ডন করে ভারত বিবৃতি দিলেও প্রশ্ন উঠে গেল এতেই সম্পর্কের তিক্ততা ঘুচবে তো? এটা স্পষ্ট যে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত আফ্রিকার দেশগুলির রাষ্ট্রদূতেরা পড়ুয়াদের উপরে হামলার ঘটনায় মূলত উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ এবং কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকেই দায়ী করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:১২

আফ্রিকার দেশগুলির অভিযোগ খণ্ডন করে ভারত বিবৃতি দিলেও প্রশ্ন উঠে গেল এতেই সম্পর্কের তিক্ততা ঘুচবে তো? এটা স্পষ্ট যে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত আফ্রিকার দেশগুলির রাষ্ট্রদূতেরা পড়ুয়াদের উপরে হামলার ঘটনায় মূলত উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ এবং কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকেই দায়ী করেছেন। বিদেশ মন্ত্রক নাইজেরীয় যুবকদের নিগ্রহ ও কেনীয় যুবতীকে নিগ্রহের অভিযোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বোঝাতে চেয়েছে, কেন্দ্র ও উত্তরপ্রদেশের সরকার মোটেই নিষ্ক্রিয় ছিল না। কিন্তু কূটনীতিকদের ধারণা, এ বার পুরনো ঘটনাগুলিও ফের সামনে চলে আসবে। যা আরও অস্বস্তি বাড়াবে মোদী সরকারের। গত দু’বছরে মোদীর জমানাতেই রোয়ান্ডা, উগান্ডা, নাইজেরিয়া, কঙ্গো-সহ বিভিন্ন দেশের বাসিন্দাদের উপরে হিংসার ঘটনা ঘটেছে দিল্লি, বেঙ্গালুরুর মতো শহরে। ঠিক এক বছর আগে দিল্লির বসন্তকুঞ্জে কঙ্গোবাসী মাসুন্ডা অলিভারকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। এই ঘটনাগুলি নিয়ে চাপানউতোর শুরু হলে ভারত ও আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে সম্পর্কেও তার বিরূপ প্রভাব পড়বে।

প্রকাশ্যে কিছু না বললেও বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা ঘরোয়া ভাবে মানছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় কিছু খামতি ইতিমধ্যেই হয়েছে। আবার তাঁরা এটাও মনে করছেন যে, এই পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক ভাবে পাল্টা কড়া কোনও বিবৃতি দিয়ে অভিযোগ খণ্ডন করলেই সমস্যা মিটে যাবে এমন নয়। বিবৃতিতে সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকার কথা তুলে ধরা হলেও ভিতরে ভিতরে ক্ষোভ কমানোর চেষ্টাও চালাচ্ছে সাউথ ব্লক।

এরই সঙ্গে শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ কতটা ধাক্কা খেল ভারত। আমেরিকার কানসাসে ভারতীয় খুন হওয়ায় সে দেশের জাতিবিদ্বেষ নিয়ে সরব হয়েছে ভারত। আজ তাদেরই কাঠগড়ায় তুলেছে আফ্রিকার দেশগুলি।

কেন এমন ঘটছে? কোনও কোনও সমাজতত্ত্ববিদ বলছেন, কালো চামড়ার প্রতি দীর্ঘ দিনের বিরূপ মানসিকতার কথা। উঠছে পাল্টা যুক্তিও। কারণ অতীতেও আফ্রিকার মানুষেরা ভারতে এসেছেন। সমাজের সঙ্গে তাঁরা মিশেও গিয়েছেন। গুজরাতে-মহারাষ্ট্র পশ্চিম উপকূল এলাকায় রয়েছেন তাঁরা। আসলে বর্তমানে আফ্রিকার পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে মাদক পাচার ও অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগ উঠছে। রাজনীতির একাংশ লোকজনের মত, এ সব মোদী তথা বিজেপির উগ্র রাষ্ট্রবাদী রাজনীতিরই ফল। নরমাংস খাওয়ার মতো অভিযোগ তোলা কিংবা ভিন্‌দেশিদের বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষী উন্মত্ততা তৈরির ইন্ধন জোগাচ্ছে তাঁদের রাজনীতি।

আর তারই জেরে ধাক্কা খাচ্ছে ইন্দো-আফ্রিকা সম্পর্ক। অথচ এই মোদীই ক্ষমতায় এসে আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। তাঁরই ডাকে সাড়া দিয়ে ২০১৫ সালে দিল্লির সমাবেশে আফ্রিকার অন্তত ৪০টি দেশের নেতারা যোগ দিয়েছিলেন। মোদী নিজেও উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছেন ওই মহাদেশে গিয়ে। সেখানকার দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রে তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেই আশা জাগছিল। আফ্রিকার পড়ুয়াদের উপরে হামলা নিয়ে নতুন যে চাপানউতোর শুরু হল তাতে আখেরে বিপদ ভারতেরও। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে ভারতের। প্রচুর ভারতীয়েরও বাস সেখানে।

Nigeria India Narendra Modi Uttar Pradesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy