জম্মু, শ্রীনগর, লেহ এবং পাঠানকোট-সহ সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরে অসামরিক বিমানের ওঠা নামা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার ভোররাতে পাকিস্তানের মাটিতে জইশ জঙ্গি ঘাঁটি ভারতীয় বায়ুসেনা গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরই উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছিল নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং গুজরাত ও পঞ্জাব সীমান্তে। বুধবার সকালে তা আরও বেড়ে যায় যখন পাকিস্তান বিমান বাহিনীর চারটি এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন করে কাশ্মীরের নৌশেরা সেক্টরে ঢুকে বোমাবর্ষনের চেষ্টা চালায়। তারই মধ্যে ভারতের উদ্দেশে তালিবানের বার্তা উপমহাদেশীয় রাজনৈতিক উত্তেজনায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। উত্তেজনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জল্পনা।
যদিও এরই মধ্যে পাক বিদেশ মন্ত্রক দাবি করে, তাঁরা সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ানোর পরিপন্থী। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়সল একটি টুইট বিবৃতিতে বলেন, সকালের বিমান হানার উদ্দেশ্য ভারতকে বোঝানো যে আত্মরক্ষার জন্য আমরা সব রকমভাবে প্রস্তুত। কিন্তু তাতে গোটা উপমহাদেশ জুড়ে যে সম্ভাব্য সংঘর্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা আদৌ কমাতে পারেনি। কারণ নয়া দিল্লিতেও দেখা যায় তৎপরতা। প্রধানমন্ত্রী নিজের বাসভবনে জরুরি নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠক ডাকেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, পাক বাহিনীর হামলার চেষ্টা রুখে উল্টে পাল্টা আক্রমণে ভারতীয় বাহিনী পাক বিমান বাহিনীর ফাইটারকে গুলি করে নামিয়েছে। সেই উত্তেজনা থিতিয়ে যাওয়ার আগেই পাক সেনা মুখপত্রের দাবি ঘিরে ফের গোটা উপমহাদেশে বাড়তে থাকে উত্তেজনার পারদ।
সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে এ তথ্য জানতেন?
পাক সেনা মুখপাত্র আসিফ গফুর দাবি করেন, এ দিন ফের ভারতীয় ফাইটার পাক আকাশে ঢুকে পড়লে পাক বাহিনী দুটি ভারতীয় ফাইটারকে গুলি করে নামায়। পাক সেনা মুখপাত্র দাবি করেন যে তাঁরা নাকি একটি ভেঙে পড়া ভারতীয় ফাইটারের পাইলটকেও গ্রেফতার করেছেন। পাক সেনা মুখপাত্র তাঁদের দাবির সপক্ষে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের দাবি, ভিডিয়োতে বায়ু সেনার উর্দিতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে তিনিই ওই গুলি করে নামানো ভারতীয় বিমানের পাইলট। পাক সেনার ওই বিবৃতির কিছুক্ষণ পরেই বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার এ দিন সকালে ভারতের আকাশে পাক বিমান বাহিনীর হামলার ব্যর্থ প্রচেষ্টা নিয়ে বিবৃতি দেন। তিনি এটাও জানান যে সকালের ঘটনায় ভারতীয় বিমান বাহিনী একটি মিগ ফাইটার হারিয়েছে এবং তার পাইলট এখনও নিখোঁজ।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে আকাশসীমা লঙ্ঘন ৪ পাক যুদ্ধবিমানের, ১টিকে গুলি করে নামাল বায়ুসেনা
কিন্তু সামগ্রিক ভাবে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষের আবহ বুধবার সকালে এতটাই বেড়ে যায় যে, জম্মু, শ্রীনগর, লেহ এবং পাঠানকোট-সহ সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরে অসামরিক বিমানের ওঠা নামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুপুরে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলেও নেওয়া হয়। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সীমান্তের অন্য পারে পাকিস্তানও একই ভাবে লাহৌর, মুলতান শিয়ালকোট-সহ একাধিক বিমানবন্দরে অসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতেই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নৌশেরা, পুঞ্চ আখনুর এলাকায় ব্যপক গোলাগুলির খবর পাওয়া যায়। সরাকারি ভাবে সকাল থেকে ঘটে যাওয়া ঘটনাক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে কোনও বিবৃতি না থাকায় সব মিলিয়ে দুপুর গড়ানোর আগেই আরও বাড়ে জল্পনা।
আরও পড়ুন: ‘অন্ধকারে কিছু ঠাহর হয়নি’, সাফাই দিতে গিয়ে ট্রোলড পাক মন্ত্রী
অন্যদিকে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আফগানিস্তানে তালিবান মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ একটি বিবৃতি দিয়েছেন বুধবার সকালে। সেই বিবৃতিতে তিনি ভারতকে সতর্ক করে বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানের বুকে নতুন করে কোনও হামলার চেষ্টা না করে। কারণ পাকিস্তানের উপর ভারতের কোনও ধরনের সামরিক সক্রিয়তা আফগানিস্তানের শান্তিপ্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করবে। ওই তালিবান নেতা্ জানিয়েছেন, ভারতের এই সামরিক সক্রিয়তা উপমহাদেশের আঞ্চলিক শান্তি বিঘ্নিত করবে এবং তাতে ভারতকে বড় মূল্য চোকাতে হবে।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy