যিনি যুদ্ধ করেন, তিনি ‘রামচরিতমানস’ও পড়েন। শুধু তা-ই নয়, গড়গড় করে আবৃত্তিও করে যেতে পারেন কোনও কিছু না দেখেই। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাংবাদিক বৈঠকে এমন নানা কিছুর সাক্ষী থাকল দেশ। সেনার বীররসবোধের পরিচয়ও পেল।
আজ ‘অপারেশন সিঁদুরে’র দ্বিতীয় সাংবাদিক বৈঠকটি করেন সেনার তিন বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও)। শুরুতেই ভারতীয় সেনার হামলায় পাকিস্তানের সামরিক ক্ষয়ক্ষতির কথা বলতে গিয়ে একটি ভিডিয়ো দেখানো হয়। তার নেপথ্যে পশ্চিমি দ্রুত লয়ের গানের সুরে-তালে বেজেছে হিন্দি কবি রামধারী সিংহ ‘দিনকরে’র পঙ্ক্তি— ‘প্রার্থনা নয়, এ বার যুদ্ধ / জীবন জয়, নয়তো মৃত্যু’...। পাণ্ডবপক্ষকে পাঁচটি গ্রাম দিয়ে আসন্ন যুদ্ধ থামানোর জন্য দুর্যোধনকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন কৃষ্ণ। দুর্যোধন তা খারিজ করে দিলে এই কথাগুলিই বলেছিলেন তিনি, দিনকর রচিত ‘রশ্মীরথী’ কাব্যে।
বৈঠক শেষে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন এ দিনের বৈঠকে দিনকরের উদ্ধৃতি এবং তার আগে রবিবারের বৈঠকে শিবস্তোত্রের ব্যবহার নিয়ে। জবাবে তুলসীদাসের ‘রামচরিতমানস’ উদ্ধৃতি করে এয়ার মার্শাল এ কে ভারতী বলেন, ‘বিনতি শোনে না জলধি অসাড়/ তিন দিন গেল এ রীতি/ সক্রোধে তখন বলেন রাম/ ভয় ছাড়া হয় না প্রীতি।’ নানা মিষ্টি কথায় যখন চিঁড়ে ভিজল না, পথ করে দিল না সমুদ্র, রাম তখন ধনুক তুলে ধরে এই কথাগুলিই বলেছিলেন তুলসীদাসের কাব্যে। তা উদ্ধৃত করে এয়ার মার্শাল ভারতীয় বৈঠকে বলেন, “সমাঝদারের জন্য ইঙ্গিতই যথেষ্ট।”
ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাইয়ের মুখে এ দিন শোনা গিয়েছে ক্রিকেটের উদাহরণ। বিরাট কোহলির অবসর ঘোষণার প্রসঙ্গ ধরে তিনি চলে যান ১৯৭০ সালে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ‘অ্যাশেজ’ সিরিজের কথায়। লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব জানান, তখন তিনি হাই স্কুলে পড়ছেন। অস্ট্রেলিয়া সেই সময় তাদের দুই দাপুটে খেলোয়াড়কে নিয়ে একটি ছড়া কেটেছিল— ‘ভস্ম থেকে ভস্ম, ধূলার থেকে ধুলো/ লিলি যদি না-ও পারে/ থোম্মোর বলে উড়ো’।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)