২০২৮ সাল পর্যন্ত আমেরিকার গ্রিন কার্ডের লটারি থেকে বাদ ভারতীয়েরা। অর্থাৎ, আগামী তিন বছর মার্কিন মুলুকে অভিবাসনের জন্য গ্রিন কার্ডের লটারিতে ভারতের কেউ যোগ দিতে পারবেন না। হোয়াইট হাউসের কুর্সিতে দ্বিতীয় বারের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অভিবাসন নিয়ে কড়া হয়েছেন। গ্রিন কার্ড লটারির নিয়ম অনুযায়ী, আগামী অন্তত তিন বছর আমেরিকায় অভিবাসনের অন্যতম সহজ রাস্তা ভারতীয়দের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাকি যে রাস্তাগুলি খোলা আছে, তাতেও বাড়ছে কড়াকড়ি।
আমেরিকায় অভিবাসীদের মধ্যে বৈচিত্র আনতে গ্রিন কার্ড ভিসা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। এর পোশাকি নাম আমেরিকা ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি) লটারি, তবে গ্রিন কার্ড লটারি হিসাবেই এটি পরিচিত। কোন বছর কোন দেশ থেকে নাগরিকেরা আমেরিকায় অভিবাসনের অনুমতি পাবেন, তা এই লটারির মাধ্যমে ঠিক হয়। নিয়ম অনুযায়ী, শেষ পাঁচ বছরে যে সমস্ত দেশ থেকে ৫০ হাজারের কম মানুষ আমেরিকায় থাকতে গিয়েছেন, সেই দেশের নাগরিকেরাই লটারিতে সুযোগ পাবেন। ভারত সেই সীমা পেরিয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে ভারত থেকে ৯৩,৪৫০ জন, ২০২২ সালে ১,২৭০১০ জন এবং ২০২৩ সালে ৭৮,০৭০ জন আমেরিকায় গিয়েছেন। ২০২২ সালের পরিসংখ্যান তো সমগ্র ইউরোপ, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের পরিসংখ্যানের চেয়েও বেশি। এর ফলে ২০২৮ সাল পর্যন্ত ভারতীয় নাগরিকেরা গ্রিন কার্ড লটারির দৌড় থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। ২০২৬ সালে লটারিতে কোন কোন দেশ যোগ দিতে পারবে, সম্প্রতি তার তালিকা প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রশাসন। ভারত ছাড়াও ওই তালিকায় নাম নেই চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, কানা়ডা এবং পাকিস্তানের।
গ্রিন কার্ড লটারি ছাড়া ভারতীয়দের সামনে এখন আমেরিকায় অভিবাসনের হাতেগোনা কয়েকটি রাস্তা খোলা আছে। এইচ-১বি ভিসাকে স্থায়ী নাগরিকত্বে পরিণত করে, বিনিয়োগ ভিত্তিক অভিবাসনের মাধ্যমে, আশ্রয় চেয়ে অথবা পারিবারিক অনুদানের ভিত্তিতে আবেদন করে মার্কিন অভিবাসী হওয়া যাবে। তবে এই পথগুলিতেও ট্রাম্প নিয়ম কঠোর করছেন। এ ছাড়া, অবৈধ ভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করলে তাঁদের চিহ্নিত করে দেশ থেকে বার করে দেওয়া হচ্ছে। আমেরিকায় থেকে যাঁরা ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মন্তব্য করছেন, তাঁদেরও বিপদ। প্রশাসন তাঁদের চিহ্নিত করছে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সম্প্রতি ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ নেতা চার্লি কার্কের বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে মন্তব্য করায় ছ’জন বিদেশির ভিসা কেড়ে নিয়েছে ট্রাম্পের সরকার।