রাশিয়ার থেকে তেল কেনার ‘শাস্তি’ হিসাবে ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্কের বোঝা চাপিয়েছে আমেরিকা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পরেও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করেনি ভারত। তার মাঝেই মস্কোয় নিযুক্ত নয়াদিল্লির রাষ্ট্রদূত জানিয়ে দিলেন, যেখান থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে তেল পাওয়া যাবে, সেখান থেকেই তেল কিনবে ভারত।
রবিবার মস্কোয় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বিনয় কুমার রাশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা তাস-কে জানিয়েছেন, বাণিজ্য বাণিজ্যের মতোই চলবে। দেশের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে যেখানে সেরা দাম পাওয়া যাবে, সেখান থেকেই তেল কিনবে ভারত। বিনয় বলেন, ‘‘আমেরিকার সিদ্ধান্ত শুধু অন্যায্যই নয়, বরং অযৌক্তিকও।’’ ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর এই নিদান বাণিজ্যনীতির লঙ্ঘনকারী বলেও দাবি করেছেন ভারতের রাষ্ট্রদূত।
তাস-কে বিনয় বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হল ১৪০ কোটি ভারতীয়কে জ্বালানি-নিরাপত্তা দেওয়া। তা ছাড়া, রাশিয়া-সহ আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে ভারতের সহযোগিতা বিশ্বের তেলের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সাহায্য করেছে।’’ বিনয়ের কথায়, ভারতের জ্বালানি সংক্রান্ত নীতি বহিরাগত রাজনৈতিক চাপে নয়, বরং দেশের মানুষের কথা ভেবেই স্থির করা হয়। তাই দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ করবে সরকার।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন বেড়েছে। এর নেপথ্যে অন্যতম কারণ হল রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক। রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনার জন্য ভারতের পণ্যের উপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথাও ঘোষণা করেছে আমেরিকা। ট্রাম্পের অভিযোগ, ভারতের সঙ্গে ব্যবসার লভ্যাংশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করছে রাশিয়া। সম্প্রতি আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকও করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার আগে ট্রাম্প দাবি করেন, অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর ফলে রাশিয়া থেকে তেল কেনা থেকে তিনি ভারতকে দূরে রাখতে পেরেছেন। যদিও রাশিয়ার থেকে ভারত তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে বলে কোনও তথ্য নয়াদিল্লি থেকে প্রকাশ্যে জানানো হয়নি। বরং কেন্দ্রের সূত্রের দাবি, রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখবে নয়াদিল্লি।