ইন্দিরা গাঁধী।
তাঁর জমানাতেই সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক শিখর ছুঁয়েছিল। কিন্তু তার পরেও আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনকে একেবারেই মেনে নিতে পারেননি প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী। ‘সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু’ সোভিয়েত ইউনিয়নের আচরণে উদ্বিগ্ন ইন্দিরা চেয়েছিলেন, উপমহাদেশে ‘আগ্রাসন’ ঠেকাতে ভারতের নেতৃত্বে একটি আঞ্চলিক কৌশলগত রণনীতি তৈরি হোক। এ জন্য ‘শত্রু’ পাকিস্তানকেও পাশে চেয়েছিলেন তিনি। প্রয়াত পাক প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়া উল হককে এ নিয়ে প্রস্তাবও পাঠান। সম্প্রতি মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র একটি গোপন নথি প্রকাশ্যে আসার পরে এই তথ্য জানা গিয়েছে।
১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের কয়েক মাস পরেই ক্ষমতায় ফেরেন ইন্দিরা। সোভিয়েতের আচরণে তিনি যে উদ্বিগ্ন, তার প্রমাণ ক্ষমতায় বসার পরেই তিনি আঞ্চলিক কৌশলগত রণনীতি তৈরি করতে চেয়ে বার্তা পাঠান জিয়া উল হককে। ঘাড়ের কাছে সোভিয়েত বাহিনীর উপস্থিতিতে আতঙ্কিত হলেও পাক সরকার ইন্দিরার প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিল। এমনিতেই সে সময় মস্কোর সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক মোটেই ভাল ছিল না। তার উপর ১৯৭১-এর যুদ্ধে ভারতের কাছে শোচনীয় হার এবং সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন যে ভাবে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছিল, তার স্মৃতি তখনও টাটকা ইসলামাবাদের কাছে। এর মধ্যেই আফগানিস্তানের ঘটনার পরে পাক কর্তাদের আশঙ্কা ছিল, ভারত এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে। মার্কিন কর্তাদের কাছে ভারতের পরিকল্পনাকে ‘দাদাগিরি’ বলে উড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীকে ঠেকাতে আমেরিকা অস্ত্র দিতে চাইলে সেই প্রস্তাবে সাড়াও দেয় ইসলামাবাদ।
মার্কিন কর্তাদের মতে, ভারতের আশঙ্কার কারণ সে সময় আমেরিকা-পাকিস্তান সম্পর্ক। উপমহাদেশে নিরঙ্কুশ প্রভাব থাকলেও আফগানিস্তান-সঙ্কটের জেরে ভারত মহাসাগরে মার্কিন রণতরীর বাড়তি উপস্থিতি গোটা এলাকার পরিস্থিতি বদলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল নয়াদিল্লির। পরবর্তী সময়ে আশঙ্কা দেখা দেয় অন্যত্র। মার্কিন অস্ত্রে বলীয়ান পাকিস্তানের তরফে হামলার আশঙ্কা করেছিলেন ভারতের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy