Advertisement
E-Paper

অন্দরের দ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল কংগ্রেসে

ইউপিএ-তে অন্তর্ঘাত বা ‘সাবোতাজ’ হয়েছিল কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন মণীশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২০ ০৪:৫৪
মণীশ তিওয়ারি।

মণীশ তিওয়ারি।

চব্বিশ নম্বর আকবর রোডের ভিতরে টানাপড়েন চলছিলই। কংগ্রেসের অন্দরমহলের সেই দ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল।

নিজে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী ছিলেন মণীশ তিওয়ারি। তিনি আজ প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুললেন, কংগ্রেসের ভরাডুবির কারণ ইউপিএ সরকারের ব্যর্থতা কি না, তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা দরকার। ইউপিএ-তে অন্তর্ঘাত বা ‘সাবোতাজ’ হয়েছিল কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন মণীশ।

গত কাল ‘টিম রাহুল’-এর সদস্য রাজীব সতাভ এই প্রশ্নটিই তুলেছিলেন। তবে দলের অন্দরে। সে দিন সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদদের ভার্চুয়াল বৈঠকে কপিল সিব্বলও কংগ্রেসের বর্তমান দুর্দশার কারণ খুঁজতে আত্মনিরীক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা তোলেন। জবাবে সতাভের দাবি, সব রকম পর্যালোচনা হোক। ২০০৯-এ লোকসভায় ২০০-র বেশি সাংসদের দলটা কী ভাবে ২০১৪-য় ৪৪-এ নেমে এল, তা দেখা হোক। বৈঠকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, গুলাম নবি আজাদ, পি চিদম্বরম, আনন্দ শর্মার মতো ইউপিএ সরকারের মন্ত্রীরাও হাজির ছিলেন। সূত্রের মতে, মন্ত্রী হিসেবে তাঁরা কোথায় ব্যর্থ হয়েছিলেন, সে সবও দেখা দরকার বলেও মন্তব্য করেন সতাভ।

রাহুলের আস্থাভাজন নেতার মুখে এমন কথা শুনে নীরব থাকেন মনমোহন, চিদম্বরমরা। কিন্তু মণীশ আজ প্রকাশ্যে ২০১৯-এর হারেরও পর্যালোচনার দাবি তুলেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, মণীশ কি তবে পাল্টা জবাবে রাহুলের নেতৃত্বে ২০১৯-এর হারের দিকে আঙুল তুলছেন? গত কালের বৈঠকে পঞ্জাবের প্রবীণ নেতা শামসের সিংহ ডাল্লো অভিযোগ তুলেছিলেন, প্রবীণদের অবহেলা করা হচ্ছে। অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব না-দিয়ে তল্পিবাহক নবীনদের পদ দেওয়া হচ্ছে। রাহুল-ঘনিষ্ঠ কেরলের কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপালকে রাজস্থান থেকে রাজ্যসভায় জিতিয়ে আনা নিয়েও পরোক্ষে প্রশ্ন তোলেন অনেকে।

কংগ্রেস নেতারা বলছেন, দলের এই অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসা থেকেই স্পষ্ট যে, দলের তথাকথিত নবীন ও প্রবীণ শিবিরের মধ্যে কতখানি অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। রাহুল-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, সচিন পাইলটদের বিদ্রোহে তা স্পষ্ট হয়েছে আগেই। মণীশের মতো তুলনায় তরুণ প্রজন্মের নেতার অবস্থান থেকে স্পষ্ট, নবীনরাও সকলে রাহুলের সঙ্গে নেই। ঠিক যেমন, সব প্রবীণ নেতা রাহুল-বিরোধী নন। শীর্ষ নেতৃত্বে শূন্যতার কারণেও তীব্র হয়ে উঠেছে এই অবিশ্বাস ও টানাপড়েন। ‘টিম রাহুল’ কোরাস গাইছে, রাহুলকে ফের সভাপতি পদে চাই। রাহুল নিজেই রাজি কি না, সেটাই স্পষ্ট নয়।

দলীয় ভাবে কংগ্রেস মুখপাত্র জয়বীর শেরগিল অবশ্য এই অন্তর্দ্বন্দ্বকে ‘গুজব’ ও ‘বিজেপির অপপ্রচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মণীশ ২০১৪-য় অন্তর্ঘাত বা ‘সাবোতাজ’ বলতে কী বোঝাচ্ছেন? তাঁর যুক্তি, “প্রাক্তন সিএজি বিনোদ রাইয়ের মিথ্যা টুজি রিপোর্ট থেকেই শুরু করা যেতে পারে।” ওই রিপোর্টে টুজি স্পেকট্রাম বণ্টনে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে। এর পর একে একে কয়লা খনি বণ্টন, কমনওয়েলথ গেমস কেলেঙ্কারিতে জড়ায় ইউপিএ সরকারের নাম। মণীশের যুক্তি, গত ছ’বছরে ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও আদালতে টেকেনি। বিনোদ রাইয়ের রিপোর্ট জাল ছিল। এ থেকেই প্রশ্ন জাগে, কে তাঁকে খাড়া করেছিল!

কংগ্রেসের দুর্দশার জন্য দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারকে দায়ী করার ঘটনা আগেও ঘটেছে। ২০১৪-র লোকসভা ভোটের মুখে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা জনার্দন দ্বিবেদী বলেছিলেন, “২০০৯-এর লোকসভা ভোটের পরে কংগ্রেসের বিরোধী আসনে বসা উচিত ছিল। ফের নতুন করে জোট গড়ে ক্ষমতায় বসা উচিত হয়নি।”

Congress Manish Tiwari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy