পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জবাবে পাক ভূখণ্ডের জঙ্গি শিবিরে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাত ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে উপমহাদেশে। সেই আবহেই বৃহস্পতিবার সকালে ইসলামাবাদের পরে এ বার নয়াদিল্লিতে এলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি।
বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, দু’দিনের এই সফরে ভারত ও ইরানের মধ্যে ২০তম যৌথ কমিশনের বৈঠকে যুগ্ম-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন আব্বাস। পাশাপাশি, নয়াদিল্লি-তেহরান সম্পর্ক নিবিড় করার লক্ষ্যে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে প্রতিনিধিস্তরের বৈঠকে অংশ নেবেন তিনি।
গত সোমবার পাকিস্তানে গিয়েছিলেন আব্বাস। পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড ঘিরে তৈরি হওয়া উত্তেজনার আবহে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যস্থতা করার বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি। আব্বাসই সেই সময় জানিয়েছিলেন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদে ইরানের দূতাবাস ব্যবহার করতে দিতে প্রস্তুত তেহরান।
আরও পড়ুন:
পরমাণু চুক্তি ঘিরে ওয়াশিংটন-তেহরান সংঘাতের আবহে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্তি উৎসবের আয়োজন করতে চলেছে ভারত। জয়শঙ্কর-আব্বাস বৈঠকে তার রূপরেখা তৈরি হতে পারে বলেও সাইথ ব্লকের একটি সূত্র জানাচ্ছে। ১৯৫০ সালে স্বাক্ষরিত ‘ভারত-ইরান মৈত্রী চুক্তি’ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই সম্পর্ককে আরও নিবিড় এবং কার্যকরী করে তোলার পথ খোঁজার চেষ্টা করবেন দুই বিদেশমন্ত্রী।
কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, ইরান-আমেরিকা সংঘাতের আবহে তেহরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিবিড় করার সিদ্ধান্ত এবং তা প্রচার করা রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, সে ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক-রোষে পড়ে কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক যোগাযোগ বজায় রাখা কঠিন হতে পারে। কিন্তু পাশাপাশি, সংঘাতের এই আবহে পাকিস্তানের পড়শি দেশ ইরানকে পাশে রাখাও নরেন্দ্র মোদী সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। এ ক্ষেত্রে ‘দু’দেশের অভিন্ন স্বার্থ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা’র বিষয়ে জোর দিতে চাইছে নয়াদিল্লি।