চার মাস ধরে অশান্ত ছিল ভূস্বর্গ। কাশ্মীরে বাহিনীকে লক্ষ করে পাথর ছোড়ার দৃশ্যেই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন দেশবাসী। কিন্তু হঠাৎ বদলে গিয়েছে ছবিটা। আপাতত বিক্ষোভ বন্ধ ভূস্বর্গে। ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল যার অন্যতম কারণ বলে দাবি নরেন্দ্র মোদী সরকারের। কিন্তু এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে।
দীর্ঘদিন ধরেই মোদী সরকারের দাবি, বিদেশ থেকে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে কাশ্মীরের বিক্ষোভে মদত দিচ্ছে পাকিস্তান। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, নেপাল, বাংলাদেশ ও দুবাই থেকে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা আসত বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের কাছে। সেই তহবিল থেকেই গোলমাল পাকানোর জন্য যুবকদের টাকা দিতেন তাঁরা।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, বিভিন্ন কাজের জন্য ‘মজুরি’ও বাঁধা ছিল। যেমন সেনাবাহিনীকে লক্ষ করে পাথর ছুড়লে দেওয়া হতো দিনে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা। গ্রেনেড চুরি করে ছুড়লে গ্রেনেড প্রতি ১০০০ টাকা। অস্ত্র চুরি করলে অস্ত্র প্রতি ৫০০ টাকা। হাওয়ালার মাধ্যমে আসা অর্থের বেশির ভাগটাই ছিল ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে। ফলে আপাতত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে থাকা টাকার আর কোনও মূল্য নেই। তারা যুবকদেরও টাকা দিতে পারছে না। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বিক্ষোভ। অন্তত ছ’মাস বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা আর যুবকদের ‘মজুরি’ দিতে পারবেন না বলে রিপোর্ট দিয়েছেন গোয়েন্দারা।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ সূত্র কিন্তু অন্য কথা বলছে। তাদের বক্তব্য, বিক্ষোভে ঢিলে পড়ার কারণ নোট বাতিল নয়, শীত এগিয়ে আসা। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, বিক্ষোভ কমতে শুরু করেছে টাকা বাতিল হওয়ার প্রায় দিন কুড়ি আগে, অক্টোবরের ২০ তারিখ থেকে। শীতের প্রকোপ যতই বাড়ছে, ততই রাস্তায় বেরিয়ে বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ানোর লোক কমছে ধীরে ধীরে। তা ছাড়া, বিক্ষোভের পিছনে হাওয়ালার মাধ্যমে আসা টাকার যোগসূত্র রয়েছে এমন কোনও প্রমাণও মেলেনি বলেই দাবি কাশ্মীর পুলিশের। রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল ডিজি এস পি বৈদ্য নিজেই বলেছেন, ‘‘এখনও কাশ্মীরে কোনও হাওয়ালা চক্র আমরা খুঁজে পাইনি।’’
তাই নোট বাতিলেই বিক্ষোভ বন্ধ, এমন যুক্তি মানতে পারছে না মেহবুবা মুফতি সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy