Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Israel Hamas War

২৬/১১-র সঙ্গে হামাস হানার তুলনা দূতের

২০০৮-র ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে হামলা চালায় পাকিস্তানি জঙ্গিরা। তাতে বেশ কয়েক জন বিদেশি নাগরিক ও নিরাপত্তাবাহিনীর ১৮ জন সদস্য-সহ ১৬৬ জন নিহত হন।

representational image

—প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
জেরুসালেম ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৩
Share: Save:

মুম্বইয়ে ২৬/১১ হামলার বার্ষিকীতে ওই ঘটনার সঙ্গে ইজ়রায়েলে হামাসের সাম্প্রতিক হামলার তুলনা টানলেন ইজ়রায়েলি রাষ্ট্রদূত নাওর গিলন। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানালেন, ভারত সন্ত্রাসকে চূর্ণ করছে।

২০০৮-র ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে হামলা চালায় পাকিস্তানি জঙ্গিরা। তাতে বেশ কয়েক জন বিদেশি নাগরিক ও নিরাপত্তাবাহিনীর ১৮ জন সদস্য-সহ ১৬৬ জন নিহত হন। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস, লিয়োপোল্ড কাফে, কামা হাসপাতাল, তাজ এবং ওবেরয় হোটেল ও নরিম্যান হাউসের ইহুদি কমিউনিটি সেন্টারে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা।

আজ ইজ়রায়েলি রাষ্ট্রদূত নাওর গিলন বলেন, ‘‘অনেকে আপনাদের নিরাপদ আশ্রয়ে, মুম্বইয়ে আপনাদের বাড়িতে ঢুকে এসে জীবনে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে, আতঙ্ক ছড়াতে চেয়েছিল। তা ছিল এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। তারা হামাসের মতোই আতঙ্ক ছড়াতে চেয়েছিল। খুন করার পাশাপাশি তারা হামলার পরে যাঁরা জীবিত ছিলেন তাঁদের মনে আতঙ্ক জিইয়ে রাখতে চেয়েছিল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ভারত ইজ়রায়েলের পাশে রয়েছে। তেমনই ইজ়রায়েলও ভারতের পাশে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সঠিক ভাবেই সন্ত্রাসকে আন্তর্জাতিক ঘটনার তকমা দিয়েছেন। তাই আমাদেরও আন্তর্জাতিক স্তরে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে। আমার মনে হয় ভারত ও ইজ়রায়েল কাজে ও বন্ধুত্বের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা কী ভাবে হাত মিলিয়ে কাজ করছি।’’

এ দিনের ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীও ২৬/১১-এর শহিদদের স্মরণ করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুম্বই ও গোটা দেশ এই হামলায় কেঁপে উঠেছিল। কিন্তু ভারত তার নিজের ক্ষমতায় সেই ঘটনার অভিঘাত কাটিয়ে উঠেছে। সেই একই সাহসে ভর করে এখন ভারত সন্ত্রাসকে চূর্ণ করছে।’’ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও ২৬/১১ হামলার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘‘ওই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে আমাদের প্রচেষ্টা চলবে।’’ ঘটনা হল, গত ২ বছরে পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে খুন হয়েছে ভারতের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকার একাধিক পাক জঙ্গি নেতা।

২০২১ সালে মুম্বই হামলার মূল চক্রী ও লস্কর ই তইবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ় সইদের উপরে হামলা হয়। অল্পের জন্য বেঁচে যান হাফিজ়। সেপ্টেম্বরে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের মসজিদে খুন হয় লস্কর জঙ্গি রিয়াজ় আহমেদ। সেই মাসে করাচির গুলিস্তান ই জহর এলাকায় খুন হয় মৌলানা জ়িয়াউর রহমান। তার পরেই করাচির সোহরাব গোঠ এলাকায় খুন হয় লস্করের মুফতি কাইসার ফারুকি। নভেম্বরে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে মাথা কেটে খুন করা হয় জঙ্গি নেতা খাজা শাহিদ ওরফে মিয়াঁ মুজাহিদকে। পাক পঞ্জাবের সিয়ালকোটে খুন হয় জইশ ই মহম্মদের প্রাক্তন সদস্য শাহিদ লতিফ। পাক সরকারের একাংশের দাবি, একটি শত্রু দেশের গুপ্তচর সংস্থা স্থানীয় খুনিদের একটি চক্রের সাহায্যে এই হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। প্রকাশ্যে অবশ্য বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতেই উদ্যোগী পাক সরকার।

মুম্বই হামলার সময়ে নরিম্যান হাউসের ইহুদি কমিউনিটি সেন্টারে খুন হয়েছিলেন র‌্যাবাই গ্যাব্রিয়েল হোলৎজ়বার্গ ও রিভকা হোলৎজ়বার্গ। পরিচারিকা স্যান্ড্রার সাহসিকতায় বেঁচে যায় তাঁদের বছর দুয়েকের সন্তান মোশে। পরে ইজ়রায়েলে দাদু-দিদার কাছে চলে যায় মোশে। এখন তার বয়স পনেরো। আজ ভারতবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মোশের ঠাকুর্দা র‌্যাবাই শিমন রোজ়েনবার্গ। তাঁর কথায়, ‘‘১৫ বছর ধরে আমাদের পরিবারের যন্ত্রণাকে আপন করে নিয়েছেন ভারতবাসী। সে জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। আমি জানাতে চাই, আমি, আমার স্ত্রী ইয়েহুডিট আর মোশে এমন ঘটনা সম্পর্কে ভারতবাসীর অনুভূতি বুঝি। আমরাও সেই অনুভূতির শরিক।’’ হামাস হামলার প্রসঙ্গ টেনে র‌্যাবাই শিমন রোজ়েনবার্গের বক্তব্য, ‘‘চলতি বছরে ফের বোঝা গেল জঙ্গিরা কী ভাবে ইহুদিদের খুন করতে চায়। কিন্তু আমরা এখনও চাই সারা বিশ্বে শান্তি আসুক।’’ শিমন জানিয়েছেন, মোশে ভালই আছে। সে একটি ইহুদি ধর্মীয় স্কুলে পড়ে। স্যান্ড্রা ইজ়রায়েলেই থাকেন। এক সপ্তাহ অন্তর মোশের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। স্যান্ড্রাকে নাগরিকত্বের পাশাপাশি বিশেষ সম্মান
দিয়েছে ইজ়রায়েল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Israel Hamas War 26/11 Attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE