বিচারের ক্ষেত্রে বৈচিত্র এবং অন্তর্ভুক্তিকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানালেন দেশের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই। ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে অনুষ্ঠিত লএশিয়া-এর ৩৮তম বৈঠক ছিল শনিবার। সেখানে ভার্চুয়ালি বক্তৃতা দেন বিচারপতি গাভাই। তিনি বলেন, “আইন যখন সবচেয়ে দুর্বলদের রক্ষা করে, তখনই তার যথার্থতা প্রকাশ পায়।”
শনিবারের ওই বৈঠকে বিচারপতি গাভাই প্রান্তিক এলাকা থেকে কী ভাবে আজ এই জায়গায় পৌঁছলেন সেই স্মৃতিচারণা করেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, কী ভাবে সংবিধান তাঁর জীবন বদলে দিয়েছে। তিনি বলেন, “আমার মতো নিম্ন বর্ণের পরিবারে জন্ম নেওয়ার অর্থ আমি অস্পৃশ্য, তা নয়। কারণ সংবিধান আমার মর্যাদাকে বাকি নাগরিকদের সঙ্গে সমতুল বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।’’
বিচারপতি গাভাই এ-ও জানিয়েছেন, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং মর্যাদার নীতিগুলি অবাস্তব আদর্শ নয় বরং লক্ষ লক্ষ মানুষের আকাঙ্ক্ষা, যাদের পরিচয় প্রতিদিন আক্রমণের মুখে পড়ে। গৌতম বুদ্ধ, মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী এবং বিআর অম্বেডকরের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি, সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস ভেঙে ফেলা এবং প্রান্তিকদের ক্ষমতায়নের জন্য আইন প্রণয়ন, আইন সম্পর্কে তাঁর ধারণার বদল ঘটিয়েছে।
আইনজীবীদের ভূমিকা নিয়ে এ দিন বিচারপতি গাভাই বলেন, “যখন আইন মর্যাদা রক্ষা করে, তখন তা এক জন ব্যক্তির জীবনের গতিপথও পরিবর্তন করে।” প্রধান বিচারপতি এ-ও মনে করিয়ে দেন যে, আইনজীবীদের কর্তব্য কেবল আদালত কক্ষেই শেষ হয়ে যায় না, তাঁদের কার্যালয় এবং ল ফার্মের মধ্যেও ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তির সাংবিধানিক মূল্যবোধের প্রতিফলন প্রয়োজন। বারের কাছে তাঁর আর্জি, ‘‘নিম্নবর্ণের আইনজীবীদের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি লিঙ্গ বৈষম্যকেও দূরে রাখুন।’’
বিচার বিভাগের ভূমিকা নিয়ে বলতে গিয়ে বিচারপতি গাভাই এনএম থমাস (১৯৭৬), ইন্দ্র সাহানি (১৯৯২) এবং বিকে পবিত্র (২০১৯)-র মতো যুগান্তকারী রায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেন, আদালত ধারাবাহিক ভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে যে যাঁদের মধ্যে সামাজিক অসাম্য রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে একই ধরনের নীতি নিয়ে চললে কখনওই অসাম্য দূর হয় না।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)