জি জনার্দন রেড্ডি
মেয়ের বিয়ের পাঁচ দিনের মাথায় বাবার সংস্থায় হানা দিল আয়কর দফতর। গত সপ্তাহে মেয়ের বিয়েতে ৫০০ কোটি টাকা খরচ করার অভিযোগে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা, প্রাক্তন মন্ত্রী এবং খনি মাফিয়া জি জনার্দন রেড্ডি। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন আরটিআই কর্মী এবং আইনজীবী টি নরসিংহ মূর্তি।
আয়কর দফতর তার পরে আশ্বাস দিয়েছিল, এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। সেইমতো সোমবার বল্লারীতে রেড্ডির ওবুলাপুরম খনি সংস্থায় হানা দেন আয়কর দফতরের অফিসাররা। তা ছাড়া, রেড্ডির মেয়ে ব্রাহ্মণীর বিয়েতে যে সব সংস্থা জড়িত ছিল, তাদের দফতর-সহ বেঙ্গালুরুর দশটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে আয়কর দফতর। খোঁজ চলেছে হায়দরাবাদের কিছু সংস্থাতেও।
গত বুধবার বেঙ্গালুরুর অভিজাত প্যালেস গ্রাউন্ডসে রেড্ডির মেয়ের বিয়ের আয়োজন হয়েছিল। একটা গোটা নকল গ্রাম বানানো হয় সেখানে। বল্লারীতে রেড্ডির বাড়ি এবং স্কুলের আদলে তৈরি করা হয় সব কিছু। ছিল কর্নাটকের হাম্পির মন্দিরের আদলে তৈরি মন্দিরও। ব্রাহ্মণীর বিয়ে হয় রাজীব রেড্ডি নামে হায়দরাবাদের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যাঁর দক্ষিণ আফ্রিকা ও অন্যত্র হিরে ও সোনার খনি রয়েছে। রাজনৈতিক শিবির থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী মহল— নজরকাড়া এমন বিয়ে নিয়ে জোর চর্চা চলেছে সর্বত্রই।
শুধু আবহ নয়, এই বিয়ের আমন্ত্রিতদের তালিকাও ছিল দেখার মতো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিজেপির প্রথম সারির অনেক নেতাকেই নেমন্তন্ন করেছিলেন রেড্ডি। বাদ যাননি কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াও। একটি সূত্রে দাবি, অতিথিদের এলসিডি টিভি পাঠিয়ে নাকি আমন্ত্রণ পাঠিয়েছিলেন রেড্ডি।
এ সব নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই বিষয়টি থেকে দূরত্ব বজায় রাখার যথাসম্ভব চেষ্টা করে বিজেপি। দলের প্রথম সারির নেতারা বিয়েতে যাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নয়াদিল্লি থেকে নির্দেশ আসে, রাজ্যের কোনও বিজেপি নেতা যেন এই অনুষ্ঠানে না যান। যদিও রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র তা মানতে চাননি। কিন্তু গোটা বিষয়টিতে শাসক দলের মুখ যে পুড়েছে, তা নিয়ে গুঞ্জন বিজেপির অন্দরেই। কারণ কালো টাকায় প্রধানমন্ত্রীর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ নিয়ে আলোচনা যখন তুঙ্গে, সেই সময়েই নিজের মেয়ের বিয়েতে বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি টাকা খরচের অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তি তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক।
বেআইনি খননের অভিযোগে অবশ্য এর আগেও জেল খাটতে হয়েছে রেড্ডিকে। এই খনি মাফিয়া বিপুল পরিমাণ করের টাকা ফাঁকি দিয়েছেন বলেও দাবি। এ বার আয়কর দফতর তাঁর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করে, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy