স্কুলের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল সে। কিন্তু চতুর্থ শ্রেণির সেই ছাত্রী আমাইরার মীনার মৃত্যুতে এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর অধরাই থেকে গিয়েছে। সম্প্রতি তার বাবা-মা দাবি করেছেন, তাঁরা নানা সূত্রে জানতে পেরেছেন ১৮ মাস ধরে আমাইরাকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। ক্লাস টিচার এ বিষয়ে অবগত থাকলেও, নজর দেননি। বরং আমারইকেই অভিযোগের ‘কাঠগ়ড়ায়’ তোলা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন বলছে, সিবিএসই যে রিপোর্ট তৈরি করেছে, সেখানে স্কুলের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত যে নিয়ম রয়েছে, সেই নিয়ম ভঙ্গ করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। আমারইরার ক্লাস ছিল নীচের তলায়। কী ভাবে সে পাঁচতলায় উঠে গেল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে রিপোর্টে। এ ছাড়াও, নিরাপত্তার জন্য এবং দুর্ঘটনা রুখতে স্কুলভবনে যে জাল লাগানোর কথা, তা-ও ছিল না। এ দিক থেকেও নিরাপত্তাজনিত নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে দাবি রিপোর্টে।
গত ১ নভেম্বর স্কুলের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আমাইরা। অভিভাবকদের অভিযোগ, আমাইরাকে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করা হত। বার বার অভিযোগের পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ করেননি। সিবিএসই তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, আমাইরার মধ্যে কোনও রকম অস্বাভাবিকতা লক্ষ করা যায়নি। ঘটনার দিন সে নেচেছে, চকোলেট এবং ফুচকাও খেয়েছে। সকাল ১১টা পর্যন্ত তার মধ্যে অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। কিন্তু ১১টার পর থেকেই ঘটনাক্রম বদলে যেতে শুরু করে। তার কয়েক জন পুরুষ সহপাঠী বোর্ডে তার সম্পর্কে এমন কিছু লিখেছিল, যা তাকে অত্যন্ত বিচলিত করে তুলেছিল। সেই লেখা মুছে দিতেও বলেছিল। এই বিষয়ে ক্লাস টিচারের মধ্যস্থতা অত্যন্ত জরুরি ছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অক্টোবরে আমাইরার ‘হ্যালো’ শব্দটিকে বিকৃত করে সকলের সামনে ‘আই লভ ইউ’ বলে চালানো হয়েছিল। যা অত্যন্ত অস্বস্তিতে ফেলেছিল আমাইরাকে। গত বছরের মে মাসেও আমাইরাকে কুইঙ্গিত করা হয়। স্কুলশিক্ষককে জানানো হলেও, তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দিতে চাননি বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। তদন্তকারী কমিটির দাবি, ক্লাসে ওই দিন অস্বাভাবিক এমন কিছু ঘটেছিল যা আমাইরাকে মানসিক ভাবে আঘাত করেছিল। এমন কিছু আলোচনা হয়েছিল, যা আমাইরাকে ব্যথিত করেছিল। সর্বশেষ উল্লেখ করা হয়েছে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মনে করা হচ্ছে, স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুলের ভিতরে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন।