বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজেদের জন-সমর্থন যাচাই করতে দলিত নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঝির দল, হিন্দুস্থানি আয়াম মোর্চা পটনার গাঁধী ময়দানে যে সভা করল তা তাঁর ঘোষিত প্রত্যাশা পূরণ করল না। তাঁদের স্বাভিমান র্যালিতে পাঁচ লক্ষ মানুষের সমাগম হবে বলে জিতনরামরা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু মেরে কেটে অঙ্কটা ৪০ হাজারের উপরে পৌঁছল না।
নীতীশ কুমারকে নিশানা করাই ছিল এই সভার উদ্দেশ্য। সভায় উপস্থিত কোনও বক্তাই বিজেপির বিরুদ্ধে একটি শব্দও খরচ না করে জেডিইউ প্রধানকেই আক্রমণের জন্য বেছে নিয়েছিলেন। বিধায়ক নরেন্দ্র সিংহ বলেন, “এই নীতীশ কুমারকে আমি মুখ্যমন্ত্রী বানিয়েছিলাম। প্রথম পাঁচ বছর ঠিক ছিল। কিন্তু তারপর থেকেই তাঁর মাথাটা ঘুরে গেল। অহংঙ্কার আর একনায়কতন্ত্রে ডুবে গিয়ে দলের নেতাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে লাগলেন। লোকসভা নির্বাচনে কাকে প্রার্থী করা হবে তা নিয়ে একটি বারের জন্যও দলের মধ্যে আলোচনা করলেন না। অহঙ্কারই তাঁর বিনাশের কারণ হবে।” দলনেতা তথা মুষহার সম্প্রদায়ের নেতা জিতনরাম বলেন, “গরিবদের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নীতীশ কুমার যখন দেখলেন তাঁর কথা মতো কাজ করছি না, তখন তিনি আমাকে সরিয়ে দিলেন।”
জিতনরামকে মুখ্যমন্ত্রী করে নীতীশ যে ভুল করেছিলেন তা আগেই স্বীকার করেছিলেন জেডিইউ প্রধান। জিতনরাম বলেন, “এই ভুল স্বীকারের জন্য তাঁকে আমি ধন্যবাদ দিই। আমাকে ১৫ মাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন। কিন্তু ১৫ দিনের মধ্যে বুঝে গিয়েছিলেন, তিনি যা ভেবেছিলেন তা হবে না।’’ জিতনরামের দাবি, তিনি গরিবদের কথা ভেবেই কাজ করতে চেয়েছিলেন। গরিবদের জন্য নেওয়া ৩৪টি সিদ্ধান্তকে নীতীশ ফের ক্ষমতায় এসেই খারিজ করেছেন। আজকের কাঠফাটা রোদে গ্রাম থেকে আসা গরিব সমর্থকদের উদ্দেশ্য জিতনরামের আবেদন ছিল, “একবার আমাকে সুযোগ দিন।’’
গত কালই জিতনরাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “সভায় পাঁচ লক্ষ মানুষ আসবেন। তা যদি না হয় তা হলে আমি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াব।” সভার লোকসমাগম দেখে জিতনরামের এই বক্তব্যের প্রতি জেডিইউয়ের কটাক্ষ, “এটা হতাশগ্রস্তদের সভা।” জেডিইউ মুখপাত্র নীরজ কুমার বলেন, “যে সভায় সাধু যাদবের মতো মানুষ থাকেন সেখানে তো গরিবদের আতঙ্ক আরও বেড়ে যাবে। কারণ এই সাধু যাদবকে বিহারের ত্রাস বলে মানা হয়।” ওই মুখপাত্রের কথায়, “বিজেপির অঘোষিত সমর্থন আদায় করতেই জিতনরামদের এই সভা।” আর রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে নীরজ কুমারের বক্তব্য, “এমনিতেই তাঁর বয়স হয়েছে। এখন আর তিনি রাজনীতিতে থাকলেন কী গেলেন, তাতে কিছু আসে যায় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy