তাপমাত্রার পারদ উঠেছে ৪০ ডিগ্রির বেশি। খোলা জিপে দাঁড়িয়ে হাত নাড়াচ্ছেন নবীন-প্রবীণ। দরদর করে ঘামছেন দু’জনেই। প্রবীণের দিকে ডাব এগিয়ে দিলেন যুব নেতাটি।
নেপথ্যে থেকে ভোপালের পথে এই অসাধ্য সাধনটি করালেন রাহুল গাঁধী। একসঙ্গে এক মঞ্চে দেখা গেল বিবদমান দুই নেতা—কমল নাথ এবং জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে।
দু’দিন আগে দিল্লির রামলীলা ময়দানে রাহুলের জন-আক্রোশ সমাবেশেও গোসা করে বসেছিলেন সিন্ধিয়া। কমল নাথকে দলের রাজ্য সভাপতি করে তাঁকে প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান করায় অসন্তুষ্ট তিনি। মঞ্চে সে দিন বক্তৃতা দিতেও রাজি ছিলেন না। অন্য নেতাদের সঙ্গে মঞ্চে বসতেও চাননি। রাজ্যে সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অশোক গহলৌত শত বুঝিয়েও রাজি করাতে পারেননি। অবশেষে আহমেদ পটেল বুঝিয়ে তাঁকে বক্তৃতা দিতে রাজি করান।
রামলীলার মঞ্চেই সনিয়া গাঁধী থেকে মনমোহন সিংহ প্রকাশ্যে আবেদন করেছেন, এখন একজোট হয়ে কাজ করার সময়। রাহুলের হাত শক্ত করার সময়। রাহুলও বলেছেন, বিজেপি-আরএসএসকে পরাস্ত করতে এখন একজোট হয়েই কাজ করতে হবে। কংগ্রেস সূত্রের মতে, জ্যোতিরাদিত্যকেও সে কথা বুঝিয়েছেন রাহুল। তার পরেই আজ এই ছবি।
সভাপতি হওয়ার পরেই বিভিন্ন রাজ্যে নেতাদের বিবাদ মেটাতে তৎপর হয়েছেন রাহুল। দিল্লিতেও রাজ্য সভাপতি অজয় মাকেনের সঙ্গে শীলা দীক্ষিতের বিবাদকে মেটানোর চেষ্টা করেছেন। মাকেনকে দিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইয়েছেন। যে সব নেতা কংগ্রেস ছেড়ে অন্য দলে চলে গিয়েছেন, তাঁদেরও ফিরিয়ে আনছেন একে একে। মার্গারেট আলভাকে দলের দায়িত্ব দিয়েছেন ভোটমুখী কর্নাটকে। সেইসঙ্গে মধ্যপ্রদেশে নবীন-প্রবীণের দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা করেছেন।
প্রদেশ সভাপতি নিযুক্ত হওয়ার পর আজ সকালে প্রথম মধ্যপ্রদেশে গেলেন কমল নাথ। ভোপালে যাওয়ার পরেই রোড-শো করেন দুই নেতা। স্লোগান তোলেন ‘বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও’। বছরের শেষেই মধ্যপ্রদেশে ভোট। লোকসভার আগে সে রাজ্যে জয় রাহুলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। গত কয়েক মাসে অনেক খেটে উপনির্বাচন জিতিয়েছেন সিন্ধিয়া। রাহুলের পছন্দও ছিলেন তিনি। তবে দলের সূত্রের খবর, দিগ্বিজয় সিংহ-সহ রাজ্যের অন্য নেতাদের জোরে বাজিমাত করেন কমল নাথ।