Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
National News

কর্নাটকে জোট সরকারের পতন, বিধানসভায় আস্থা ভোটে ৯৯-১০৫ ভোটে হারলেন কুমারস্বামী

আজ সন্ধ্যা ছ’টায় আস্থা ভোট নেওয়া হবে, আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন স্পিকার। সেই মতো আস্থা ভোট হয়। স্পিকার  জানিয়ে দেন, ৯৯ ভোট গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর পক্ষে। অন্য দিকে বিজেপির পক্ষে গিয়েছে ১০৫ ভোট।

আস্থা ভোটে হারলেন কুমারস্বামী। ছবি: পিটিআই

আস্থা ভোটে হারলেন কুমারস্বামী। ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ১৯:১৬
Share: Save:

আশঙ্কাই সত্যি হল। গত ১০-১২ দিনের স্নায়ুযুদ্ধের পরও কর্নাটকে সরকার টিকিয়ে রাখতে পারলেন না কুমারস্বামী। বিধানসভায় আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হলেন তিনি। ফলে কংগ্রেস-জেডিএস সরকারের পতন হল কর্নাটকে। এ বার নতুন করে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

আজ সন্ধ্যা ছ’টায় আস্থা ভোট নেওয়া হবে, আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন স্পিকার। সেই মতো আস্থা ভোট হয়। স্পিকার জানিয়ে দেন, ৯৯ ভোট গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর পক্ষে। অন্য দিকে বিজেপির পক্ষে গিয়েছে ১০৫ ভোট।

এ মাসের গোড়ার দিক থেকেই একের পর এক জেডিএস এবং কংগ্রেসের বিধায়করা ইস্তফা দিতে শুরু করেন। দু’দল মিলিয়ে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬ জন। এর সঙ্গে দুই নির্দল বিধায়কও ইস্তফা দেন। তাঁরাও কুমারস্বামী সরকারকে সমর্থন করেছিলেন। কর্নাটক বিধানসভায় মোট আসন ২২৫। তার মধ্যে জোটের পক্ষে ছিল ১১৮ জন। ১৮ জনের ইস্তফা দেওয়ায় জোটের পক্ষে বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়ায় ১০০। এই পরিস্থিতি বিজেপি শিবিরের প্রধান তথা বিরোধী দলনেতা ইয়েদুরাপ্পার নেতৃত্বে বিজেপি যখন অনাস্থা প্রস্তাব আনার তোড়জোড় শুরু করেন, তখনই পাল্টা চালে নিজেই আস্থা ভোটে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন কুমারস্বামী। সেটা ছিল ১২ জুলাই।

তার পর থেকে গত ১০-১১ দিন ধরে চরম স্নায়ুর যুদ্ধ চলেছে কংগ্রেস, বিজেপি, জেডিএস সব শিবিরেই। দু’টি মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। স্পিকার ওই ১৮ জনের ইস্তফা গ্রহণ করেননি। বিদ্রোহী বিধায়করা মুম্বইয়ের একটি হোটেলে গিয়ে ওঠেন এবং স্পষ্ট জানিয়ে দেন আস্থা ভোট না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা বেঙ্গালুরু যাবেন না। তার মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই আস্থা ভোট নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলেও বার বার তা পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে কংগ্রেস-জেডিএস জোট। এমনকি দু’দুবার রাজ্যপাল চরম সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরও আস্থা ভোট হয়নি। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারলেন না কুমারস্বামী। সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে কর্নাটকের সরকার পতন হলই।

আরও পডু়ন: মধ্যস্থতা বিতর্কে সংসদে তোলপাড়, বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্যে তুষ্ট নয় বিরোধীরা, মোদীর বিবৃতি দাবি

অন্য দিকে আস্থা ভোটের আগেই দুই নির্দল বিধায়কের দখল ঘিরে ধুন্ধুমার বেঙ্গালুরুতে। তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লেন বিজেপি ও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশ গিয়ে দু’পক্ষের প্রায় ১০০ জনকে গ্রেফতার করেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বেঙ্গালুরুতে কোনও রকম জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ।

সোমবার পর্যন্ত দুই নির্দল বিধায়ক কংগ্রেসের সঙ্গে ছিল বলেই খবর। কিন্তু সন্ধ্যার দিকে তাঁদের মত পাল্টে যায়। আজ মঙ্গলবারের আস্থা ভোটে তাঁরা বিজেপির পক্ষে সমর্থন দেবেন বলে খবর রটে যায়। শুরু হয় ওই দুই বিধায়কের খোঁজ। কংগ্রেস নেতারা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারেন, বেঙ্গালুরুতেই বিধানসভার কাছাকাছি রেসকোর্স রোডের একটি বাড়িতে ওই দুই বিধায়ককে রাখা হয়েছে।

এর পরই শুরু হয় কংগ্রেসের ‘উদ্ধার’ অভিযান। দলের কয়েকশো কর্মী গিয়ে কার্যত ওই বাড়ি ঘিরে ফেলেন। অন্য দিকে আগে থেকেই সেখানে মোতায়েন ছিলেন বিজেপি কর্মীরা। বাড়ির ভিতরে ঢুকতে গেলে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের বাধা দেন তাঁরা। শুরু হয় অশান্তি। মারধর, ধাক্কাধাক্কিতে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গ্রেফতার করা হয় দু’দলের শতাধিক কর্মী সমর্থককে।

আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে বেঁফাস ট্রাম্প, ড্যামেজ কন্ট্রোলে মার্কিন প্রশাসন, ক্ষমা চাইলেন কংগ্রেসের সদস্য

কংগ্রেসের অভিযোগ, সরকার ফেলতে বিজেপি মোটা টাকার বিনিময়ে দুই বিধায়ককে ‘কিনে’ নিয়েছে। জোর করে তাঁদের আটকে রেখেছে। যদিও বিজেপি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE