Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Karnataka

এ বার কর্নাটকে নাটকে নয়া মোড়, আজ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আস্থাভোট, জানালেন অধ্যক্ষ

শঙ্কা বাড়াচ্ছে ক্রমাগত কমতে থাকা বিধায়ক সংখ্যা। কাজ হয়নি বিদ্রোহীদের সঙ্গে দৌত্যেও। তাই, আস্থাভোটে জিততে নিজেই ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের আহ্বান জানিয়েছিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী।

কর্নাটকে আস্থাভোট নাটক চলছেই। ছবি: পিটিআই

কর্নাটকে আস্থাভোট নাটক চলছেই। ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৯ ১২:১০
Share: Save:

ফের ভিন্ন দিকে মোড় নিল কর্নাটক নাটক। নাটকীয় ভাবে আজই যে কুমারস্বামী সরকারকে আস্থাভোটের পরীক্ষা দিতে হবে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন স্পিকার কেআর রমেশ। ফলে, দীর্ঘ টানাপড়েনের পর, আজ স্থির হতে চলেছে কন্নড়ভূমের ভবিষ্যৎ। আস্থাভোটের জন্য সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন তিনি। কংগ্রেস ও জেডিএসের জোট সরকার আস্থাভোট নিয়ে টালবাহানা করছে, বিজেপির এই অভিযোগের উত্তরে আজ স্পিকার বলেন, ‘‘আমাদের উপর প্রত্যেকের নজর রয়েছে। আসুন আমরা লক্ষ্যে পৌঁছই।’’

দ্রুত আস্থাভোট করার দাবিতে ক্রমশই চাপ বাড়াচ্ছিল বিজেপি। ময়দানে নেমেছিলেন রাজ্যপাল বাজুভাই বালাও। সোমবার, আস্থাভোট নিয়ে বিতর্ক শুরুর আগে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন রমেশ। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেকে আমাদের দেখছেন। দয়া করে আমাকে বলির পাঁঠা করবেন না। চলুন আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছই।’’ স্পিকারের এই মন্তব্যই যেন এ দিনের অধিবেশনের সুর বেঁধে দেয়। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আস্থাভোটের সময়সীমাও বেঁধে দেন তিনি।

কংগ্রেস ও জেডিএস জোটের শঙ্কা বাড়াচ্ছে তাদের ক্রমাগত কমতে থাকা বিধায়ক সংখ্যা। ‘বিদ্রোহী’দের সঙ্গে বার বার দৌত্যের চেষ্টা করেও কোনও কাজ হয়নি। তাই, আস্থাভোটে জিততে নিজেই ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের আহ্বান জানিয়েছিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী। কিন্তু, সেই আহ্বানেও সাড়া দেননি তাঁরা। সেই দলেরই অন্যতম বিধায়ক কে গোপালাইয়ার দাবি, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম, এই সরকার ভাল কাজ করবে। কিন্তু, তা হয়নি।’’ আর এই মন্তব্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, ‘বিদ্রোহী’ শিবিরের মনোভাব। ফলে, এখন সুতোয় ঝুলছে কর্নাটকের জোট সরকারের ভবিষ্যৎ।

আরও পড়ুন: গাঁধী পরিবারের বাইরের কেউ সভাপতি হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কংগ্রেস ভেঙে টুকরো হয়ে যাবে, মন্তব্য নটবরের

সরকার বাঁচাতে অবশ্য এখনও মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন জোটের নেতারা। বিদ্রোহীদের সঙ্গে সমঝোতা করতে নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা। তাঁরা কুমারস্বামীর বদলে কংগ্রেসের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেন। সিদ্দারামাইয়া, জি পরমেশ্বর বা ডিকে শিবকুমারের মতো কংগ্রেস নেতাদের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে খাড়া করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, ‘বিদ্রোহী’ ১৮ জনের বিধায়ককে বরখাস্ত করতে অধ্যক্ষকে আবেদন করেছিল সরকার। সেজন্য আগামিকাল ওই বিধায়কদের তলব করা হয়েছে। এর মাঝেই অবশ্য কংগ্রেস-জেডিএস জোটকে সামান্য স্বস্তি দিয়েছেন কর্নাটকের একমাত্র বিএসপি বিধায়ক এন মহেশ। আস্থাভোটের সময় না থাকার কথা আগে ঘোষণা করেছিলেন মহেশ। সেই অবস্থান থেকে পিছিয়ে এসে কুমারস্বামীর পক্ষে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: গঙ্গায় ডুবন্ত ব্যক্তির জীবন বাঁচালো পুলিশ! ভিডিয়ো ভাইরাল​

বিজেপির অবশ্য বরাবরের দাবি, কর্নাটকের জোট সরকারের শেষের সময় এসে গিয়েছে। কিন্তু, তা সত্ত্বেও টালবাহানা করে তারা বাড়তি সময় কিনতে চাইছে বলে গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ। কুমারস্বামীর সরকার যে উল্টে যাবে তা নিয়ে নিশ্চিত কর্নাটকের বিরোধী দলনেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পা।

শুক্রবার, রাজ্যপাল দু’বার চরম সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরেও আস্থাভোট হয়নি কর্নাটকে। কুমারস্বামী ও সরকার পক্ষের কয়েকজনের বক্তৃতার পরেই স্থগিত হয়ে যায় বিধানসভা। তাই, সোমবারের মধ্যে আস্থাভোট করার আবেদন জানিয়ে আগেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন দুই জোটত্যাগী নির্দল বিধায়ক। যদিও, দ্রুততার ভিত্তিতে সেই আবেদন শোনার আর্জি খারিজ করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।

২২৫ আসন বিশিষ্ট বিধানসভায় কুমারস্বামীর দিকে ছিলেন ১১৮ বিধায়ক। ইতিমধ্যেই ১৮ বিধায়ক (কংগ্রেসের ১৩ বিধায়ক, জেডিএসের ৩ বিধায়ক ও ২ নির্দল বিধায়ক) জোট ছেড়েছেন। তাঁদের ইস্তফা গৃহীত হলে সরকারের হাতে থাকবে মাত্র ১০০ বিধায়ক। অন্যদিকে, সরকার গড়ার মতো সংখ্যা পার করে (ম্যাজিক ফিগার ১০৫) ১০৭ বিধায়ক রয়েছে বিজেপির ঝুলিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE