সন্ধে নামার একটু আগে...। শুক্রবার ডাল লেকে জয়ন্ত ঘোষালের তোলা ছবি।
অফিসে ঢুকে কর্মীদের বেরিয়ে যেতে বলল দুই যুবক। তার পরে ওই টেলিকম সংস্থার অফিসে একটি গ্রেনেড ছুড়ে পালাল তারা। তার দশ মিনিটের মধ্যে একই ঘটনা হল মাত্র ৮০০ মিটার দূরে অন্য একটি টেলিকম সংস্থার দোকানে। পুলিশের আইজি-র অফিসের খুব কাছের এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে শ্রীনগর ও দিল্লিকে।
পরে শহিদ জঙ্গ এলাকায় একটি মোবাইল টাওয়ারেও হামলা চালায় জঙ্গিরা। আহত হয়েছেন এক শ্রমিক। আগামিকাল কাশ্মীর উপত্যকা জুড়ে হরতালের ডাক দিয়েছে কাশ্মীরের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন।
কাশ্মীরে হিংসা কমেছে বলে কয়েক মাস আগে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। কিন্তু সোপোরে কয়েক জন প্রাক্তন জঙ্গি-সহ বেশ কিছু বাসিন্দার হত্যাকাণ্ডের ফলে সম্প্রতি অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল রাজ্যের বিজেপি-পিডিপি জোট সরকারকে। ভারত-পাক শান্তি প্রক্রিয়ায় সাম্প্রতিক টানাপড়েনের প্রেক্ষিতে পাক সেনা ও আইএসআইয়ের একাংশ কাশ্মীরে ফের আগুন ছড়ানোর খেলায় মেতেছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
আজ সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ কারেন নগর এলাকার একটি টেলিকম সংস্থার দোকানে ঢুকে পড়ে দুই জঙ্গি। সেখানে কর্মীদের বের করে দিয়ে অফিসে গ্রেনেড ছুড়ে পালায় তারা। দশ মিনিটের মধ্যেই রাজধানীর বাটামালু এলাকায় অন্য একটি টেলিকম সংস্থার দোকানে একই কায়দায় হামলা হয়। বেলা তিনটে নাগাদ তৃতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে শহিদ জঙ্গ এলাকায় তৃতীয় একটি টেলিকম সংস্থার টাওয়ারে। তবে পুলিশের দাবি, এ বার আর গ্রেনেড নয়, নিম্ন মানের বোমা ব্যবহার করেছিল জঙ্গিরা। বোমার সপ্লিন্টারে আঘাত লাগে বিহারের বাসিন্দা মহম্মদ আফিক নামে এক শ্রমিকের। আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জম্মুর গুলাবগড় সেক্টর দিয়ে আজ রাতে ১০-১২ জনের একটি জঙ্গি দল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করবে। সেই দিক থেকে নজর ঘোরাতেই এ দিন এ রকম বিচ্ছিন্ন ভাবে হামলা চালানো হয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের আগে এই ধরনের হামলা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের অনুমান, হামলার পিছনে লস্কর-ই-ইসলাম গোষ্ঠী রয়েছে। সোপোরেও জঙ্গি হানায় বন্ধ করে দিতে হয়েছিল বিভিন্ন টেলিফোন সংস্থার প্রায় ৫০টি টাওয়ার। হামলায় নিহত হন দু’জন।
জঙ্গি সন্ত্রাসের পাশাপাশি রাজৌরি এলাকায় জঙ্গি সংগঠন আইএসের পতাকা পোড়ানো নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভূস্বর্গ। চার দিন আগে রাজৌরিতে বিক্ষোভের সময়ে আইএসের পতাকা পোড়ায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সমর্থকেরা। কাশ্মীরের মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবি, ওই পতাকায় পবিত্র স্তোত্র ছিল। পতাকা পোড়ানোর প্রতিবাদে তাই আগামিকাল কাশ্মীর জুড়ে বাজার বন্ধের ডাক দিয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন।
মুফতি মহম্মদ সইদ সরকারকে তোপ দেগেছেন বিরোধী ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা। তাঁর কথায়, ‘‘শ্রীনগর সোপোর নয়। আজকের হামলার পরে সরকারের নড়েচড়ে বসা উচিত।’’ ওমরের দাবি, কাশ্মীরি যুবকেরা হতাশাগ্রস্ত হয়েই আইএস, পাকিস্তানি পতাকা তুলছেন। তাঁদের দ্রুত মূলস্রোতে ফেরাতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy