দেশের প্রথম রাজ্য হিসাবে চরম দারিদ্রসীমা থেকে মুক্ত হল কেরল। শনিবার কেরল বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে দাঁড়িয়ে এই ঘোষণা করেছেন বামশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। কোন কোন পদক্ষেপে এই সাফল্য এসেছে, রাজ্যকে দারিদ্রমুক্ত করার জন্য তিনি কী কী করেছেন, তা-ও জানিয়েছেন। যদিও বাম সরকারের এই দাবি মানতে নারাজ বিরোধীরা। শনিবারের বিশেষ অধিবেশনও তারা বয়কট করেছে।
কেরল যে সম্পূর্ণ ভাবে চরম দারিদ্রসীমার বাইরে বেরোতে চলেছে, তা আগেই জানা গিয়েছিল। নভেম্বর মাসে সরকারি ভাবে তা ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল। শনিবার মাসের প্রথম দিনেই রাজ্যকে দারিদ্রমুক্ত বলে ঘোষণা করে দিলেন বিজয়ন। শনিবার কেরলের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই কারণে এই দিনটিকে বিশেষ ঘোষণার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিজয়ন বলেন, ‘‘কেরল দেশের প্রথম চরম দারিদ্র-মুক্ত রাজ্য হল। এই বিধানসভা অতীতে অনেক ঐতিহাসিক ঘোষণার সাক্ষী থেকেছে। এখন আরও একটি মাইলফলক ছুঁল নব কেরল।’’
আরও পড়ুন:
বিজয়ন জানান, ২০২১ সালে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণের পর মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে কেরলকে চরম দারিদ্রসীমা-মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তাঁর সরকার। চার বছরে সেই অনুযায়ী কাজ এগিয়েছে। ‘এক্সট্রিম পভার্টি ইরাডিকেশন প্রজেক্ট’ (ইপিইপি)-এর মাধ্যমে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করে রাজ্যের ২০,৬৪৮টি পরিবারের দৈনন্দিন খাবার, চিকিৎসা, ওষুধপত্র নিশ্চিত করা হয়েছে। মাথার উপরে ছাদ পেয়েছেন ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ। বিজয়ন জানিয়েছেন সাড়ে পাঁচ হাজার বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। কিছু বাড়ির নির্মাণকাজ এখনও চলছে। আরও পাঁচ হাজার বাড়ি মেরামত করা হয়েছে। ২৭০০ গৃহহীন পরিবারকে বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, কেরলের ২১.২৬৩ জন নাগরিক রেশন কার্ড, আধার কার্ড পেয়েছেন। দেওয়া হয়েছে পেনশন। রাজ্য জুড়ে ৬৪ হাজারের বেশি সংবেদনশীল পরিবারকে চিহ্নিত করেছে কেরল সরকার। তাদের উন্নতির জন্য পৃথক পরিকল্পনা (মাইক্রো প্ল্যান) করা হয়েছে। সমাজমাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন।
শুক্রবার কেরলের স্বনির্ভর মন্ত্রী এমবি রাজেশ জানান, রাজনৈতিক মতপার্থক্যকে সরিয়ে শাসক এবং বিরোধীদের সমন্বয়ে এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। যে সমস্ত জায়গায় বিরোধীরা ক্ষমতায়, সেখানেও সমান গুরুত্বের সঙ্গে কাজ হয়েছে। তবে সরকারি প্রকল্পের বিরোধিতা করায় কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ জোটকে কটাক্ষ করেছেন রাজেশ।