ফাইল চিত্র।
সাক্ষর এবং শিক্ষিতের সংখ্যা বেশি হওয়া সত্ত্বেও কেরলের মতো রাজ্যে মহিলাদের উপরে নির্যাতনের বিস্তর ঘটনা কেন, তা নিয়ে বিতর্ক ছিলই। এ বার সেই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ হল সিপিআইয়ের মহিলা সংগঠনের সর্বভারতীয় নেত্রী অ্যানি রাজার মন্তব্যে। কেরল পুলিশের মধ্যে ‘আরএসএসের গ্যাং’ রয়েছে এবং তারাই মহিলাদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না বলে অভিযোগ অ্যানির। কেরলে পুলিশ দফতর মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের হাতে। অ্যানির ওই মন্তব্যে এমনই জলঘোলা হয়েছে যে, কেরলের রাজ্য সিপিআই নেতৃত্বকে দলের কেন্দ্রীয় স্তরে জানাতে হয়েছে তাঁরা এমন বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নন! মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন অবশ্য বলেছেন, এক জন প্রতিষ্ঠিত বাম নেত্রী যখন অভিযোগ এনেছেন, সরকারি স্তরে গুরুত্ব দিয়েই তা দেখতে হবে।
কেরলে এলডিএফ সরকারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক সিপিআই। দক্ষিণী ওই রাজ্যে মহিলাদের উপরে অপরাধ, পণের নামে অত্যাচার যে ভাবে বেড়ে চলেছে, সেই বিষয়ে কথা বলতে গিয়েই পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছেন অ্যানি। সিপিআইয়ের নিখিল ভারতীয় মহিলা ফেডারেশনের (এনএফআইডব্লিউ) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যানি ব্যক্তিগত পরিচয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার সহধর্মিণী। তাঁর অভিযোগ ঘিরে স্বভাবতই হইচই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে। দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের জন্য সিপিআইয়ের শীর্ষ স্তরের নেতারা এখন দিল্লিতে। সেখানেই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে কেরল সিপিআইয়ের নেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা এমন অভিযোগকে সমর্থন করছেন না। রাজনৈতিক স্তরেও যাতে দুই শরিক দলের নেতৃত্বের মধ্যে এই নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি না হয়, তা দেখার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
সিপিআইয়ের কেরল রাজ্য সম্পাদক কানম রাজেন্দ্রনের বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলের রাজ্য স্তরের কেউ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এমন কোনও অভিযোগ তোলেননি। পুলিশের কাজ নিয়ে এই ধরনের কোনও বক্তব্য আমাদের নেই।’’ দলের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে আাখ্যা দিয়ে বিতর্কে ইতি টানতেও চেয়েছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা ভি মুরলীধরন সিপিআই নেত্রীর মন্তব্যের জেরে পাল্টা তোপ দেগেছেন বামেদের দিকেই। তাঁর মতে, ‘‘নিজেদের অদক্ষতা, ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং দুর্নীতি আড়াল করার জন্য কংগ্রেস ও বামেরা সব ব্যাপারেই সঙ্ঘ পরিবারের ভূত খুঁজে পায়! কেরলে স্বরাষ্ট্র দফতর রয়েছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের হাতে। পুলিশে ‘আরএসএস গ্যাং’ থাকলে তা হলে দায় কার? আরএসএস দফতর নয়, সিপিআই নেত্রীর জবাব চাওয়া উচিত এ কে জি সেন্টারে (সিপিএমের রাজ্য দফতর)!’’
শরিক সিপিআইয়ের রাজ্য নেতৃত্ব বিতর্ক মিটমাট করে নিতে চাইলেও মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন অ্যানির অভিযোগকে ‘গুরুত্ব’ দেওয়ার কথাই বলেছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘উনি জাতীয় স্তরের নেত্রী। কোথাও এমন খবর পেয়েছেন বলেই নিশ্চয়ই ওই কথা বলেছেন। সরকারি স্তরে বিযয়টাকে গুরুত্ব দিয়েই খতিয়ে দেখতে হবে।’’ সিপিএম রাজ্য নেতাদের একাংশ অবশ্য বলছেন, বিজয়ন যা বলেছেন, তা আসলে কটাক্ষের সুরেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy