টোপ ফেলেই জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) সংগঠনের জঙ্গি মহম্মদ ইব্রাহিম শেখ ওরফে লাল্টুকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার পাকুড় থেকে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্তকে পাকড়াও করার পর এমনই বলছে এনআইএ, পুলিশ।
আজ এনআইএ গোয়েন্দারা ধৃত জঙ্গিকে জেরা করতে পাকুড়ে পৌঁছেছেন। তাঁরা জানান, ইব্রাহিমকে ধরতে পাকুড়ের একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও এক হাতুড়ে চিকিৎসককে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।
গত বছর ২ অক্টোবর খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পর নভেম্বরের প্রথম দিকে এনআইএ পাকুড়ের সংগ্রামপুর গ্রাম থেকে সালাউদ্দিন শেখ ও জাহাঙ্গির খান নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। সালাউদ্দিন ছিল সংগ্রামপুরের একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক। জাহাঙ্গির হাতুড়ে চিকিৎসক। ইব্রাহিম যে তাদের মাধ্যমে গ্রামের গরিব সংখ্যালঘু পরিবারগুলির মধ্যে টাকা ও জেহাদি ভাবধারার বই বিতরণ করছে— সেই খবর মিলেছিল। কিন্তু সালাউদ্দিন আর জাহাঙ্গিরের সঙ্গে জেএমবি-র যোগাযোগের প্রত্যক্ষ প্রমাণ ছিল না। নভেম্বরের মাঝামাঝি তাদের ছেড়ে দেয় এনআইএ। তবে গোপনে নজরদারি চলতে থাকে।
পাকুড়ের পুলিশ সুপার অনুপ বিরথারে জানান, ফের সংগ্রামপুরে যাতায়াত শুরু করে ইব্রাহিম। ওদের সঙ্গে যোগাযোগের কথা জেরায় ইব্রাহিম স্বীকার করেছে। দু’জনের খোঁজ চলছে। ধৃত জঙ্গিকে জেরা করে গোয়েন্দারা জেনেছেন, পাকুড়, সাহেবগঞ্জের মতো জেলাগুলিতে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশির সংখ্যা বেশি। পাকুড়ের সংগ্রামপুর, সাহেবগঞ্জের রাধানগর, উধুয়ার মতো জায়গায় ২০-২২টি মাদ্রাসায় জেএমবি সক্রিয় সংগঠন তৈরি করে ফেলেছে। সেই সব জায়গায় প্রায় শ’দুয়েক যুবক কম ক্ষমতার বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণও পেয়েছে। তারা ৯ মিমি পিস্তলও চালাতে জানে।
এনআইএ সূত্রে খবর, জেএমবি শীর্ষনেতাদের অন্যতম ইব্রাহিম শেখ আদতে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। তার কাজ ছিল সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় গিয়ে নিরাপদে সংগঠন চালানো যায় এমন জায়গার খোঁজ করা। সংগ্রামপুর বা রাধানগরের অনেক ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইব্রাহিমই নিয়ন্ত্রণ করত। গরিব গ্রামবাসীদের টাকা দেওয়া হতো। গোয়েন্দারা জানান, পাকুড়, রাজমহলের মতো জায়গার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম জানিয়েছে ইব্রাহিম। সেগুলির বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy