খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংহকে এখনও ধরতে পারেনি পঞ্জাব পুলিশ। দাবি করা হচ্ছে, জাল ক্রমশ গুটিয়ে তাঁকে কোণঠাসা করে ফেলা হয়েছে। পুরো বন্ধ করা হয়েছে হরিয়ানা সীমানা। পাকিস্তানে পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে চূড়ান্ত সতর্ক করা হয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে। আরও বাড়ানো হয়েছে ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞা। অমৃতপালের টাকাকড়ি সামলানোর দায়িত্বে থাকা দলজিৎ সিংহকে রবিবার হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সূত্রে খবর।
পঞ্জাবে পুলিশি অভিযানে শনিবার থেকে এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ৭৮ জনকে। তার মধ্যে ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ সংগঠনে অমৃতপালের চার সহযোগীকে বায়ুসেনার বিমানে আজ অসমের ডিব্রুগড়ে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। দেশের অন্যতম পুরনো, উচ্চ-নিরাপত্তার ডিব্রুগড় কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁদের রাখা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, ‘‘এটা পুলিশের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপার। অসমে ধরার পরে নিরাপত্তার জন্য অনেক সময় বিহারের ভাগলপুর জেলেও পাঠানো হয়ে থাকে। তেমনই, হয়তো পঞ্জাব পুলিশ ক’দিন বন্দিদের অসমে রাখার কথা ভেবেছে।’’
পঞ্জাবের সমস্ত রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যেই অমৃতপালকে কাঠগড়ায় তোলার কথা বলেছে। রাজ্যে ‘সন্ত্রাসের বাতাবরণ’ তৈরি না-করতে বলে আজ সরকারকে বার্তা দিয়েছেন শিখ ধর্মের সর্বোচ্চ কেন্দ্র অকাল তখতের প্রধান বা জঠ্ঠেদার জ্ঞানী হরপ্রীত সিংহ। ব্যাপক এই পুলিশি অভিযানে আশি এবং নব্বইয়ের দশকের একটা দীর্ঘ সময়ের তপ্ত পঞ্জাবের কথা আলোচনায় উঠে আসছে। হরপ্রীতের বক্তব্য, পঞ্জাব ইতিহাসের অনেক ক্ষত ধারণ করেছে আর কোনও সরকারই নিরাময়ের ব্যাপারে কিছু করেনি। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্জাব যথেষ্ট ভুগেছে। এখন একটা ভাল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলার সময়।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, বার বার পোশাক আর গাড়ি বদলে নাগাল থেকে ফস্কে যাচ্ছেন অমৃতপাল। জালন্ধরে তাঁর ছেড়ে যাওয়া তেমন গাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধারও হয়েছে। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, অভিযানের আগে থেকে পালাতে শুরু করায় কয়েক কদম এগিয়ে থাকছেন অমৃতপাল। তবে থানায় হামলার ঘটনার এক মাস পরে অভিযান হচ্ছে। অমৃতপাল তার আঁচ পেলেন কী করে, সেই বিষয়ে নীরব পুলিশকর্তারা। জানানো হয়েছে, অভিযানের জন্য আরও দল গঠন হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)