মুক্তিপণ পেয়েও অপহৃত কিশোর ও দুই যুবককে খুন করল অপহরণকারীরা। মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের ঘটনা।
পুলিশ জানায়, ২৭ অগস্ট তুরা বাজারের এক মাংস বিক্রেতার ছেলে সুলেমান শেখ (১৫) ও তার দুই সঙ্গী জিট্টু ঋষি (৩২) ও বালসেংকে (২৮) খেরাপাড়া বাজার এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। সুলেমানের বাবার কাছে ফোনে ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। দর কষাকষির পরে মুক্তিপণের পরিমাণ কমে ৩ লক্ষ টাকা হয়।
রবিবার দরগ্রেং এলাকা থেকে অপহরণকারীরা ওই টাকা সংগ্রহ করে ভরসা দেয়, তিন জনকে সে দিনই মুক্তি দেওয়া হবে। কিন্তু তারপর থেকে অপহৃতদেরও হদিস ছিল না, অপহরণকারীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। এ দিকে ভয়ে অপহৃতদের পরিবার পুলিশকেও কিছু জানাননি। কিন্তু ঘটনার কথা জেনে পশ্চিম গারো হিল পুলিশ তদন্ত শুরু করে। অপহরণকারীদের শণাক্তও করা হয়। এদের মধ্যে চার জনকে গত কাল পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃতদের সকলেরই বয়স ১৯ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তারা জেরায় জানায়, মুক্তিপণ মেলার পরে গত রবিবারেই তিন অপহৃতকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল। ধৃতদের নিয়ে পুলিশ ডুমনিকুরার ডিপলিপাড়ার জঙ্গলে তল্লাশি চালায়। বিকেলে তিনটি অর্ধগলিত দেহ উদ্ধার করা হয়। পশ্চিম গারো হিলের এসপি মুকেশ সিংহ জানান, অপহরণকারী দলের এক সদস্য এখনও পলাতক।
অন্য দিকে দীর্ঘদিন থেকে আলফা স্বাধীনের হাতে বন্দি থাকা কুলদীপ মরাণকে এ দিন মুক্তি দেয় আলফা। ১ অগস্ট অরুণাচলপ্রদেশের চাংলাং থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল। তিনসুকিয়া জেলার বিজেপি সভাপতি রত্নেশ্বর মরাণের পুত্র কুলদীপ মরাণের মুক্তির বিনিময় বিধায়ক বলিন চেতিয়ার কাছ থেকে ১ কোটি টাকা চেয়েছিল আলফা স্বাধীন। পুলিশ জানায়, কুলদীপকে মায়ানমারের ভিতরে কোনও ঘাঁটিতে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে একাংশ সংবাদমাধ্যমের কাছে আলফার তরফে একটি ভিডিও বার্তা আসে। সেখানে দেখা যায়, বন্দুকধারীরা ঘিরে রেখেছে কুলদীপকে। মুক্তিপণ দিয়ে তাঁকে দ্রুত মুক্ত করার আবেদন জানান কুলদীপ। পরেশ বরুয়া অবশ্য দাবি করেন, কুলদীপ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর চর হিসেবে কাজ করত। হাতির ব্যবসার আড়ালে তার কাজ ছিল আলফার স্বাধীন জঙ্গিদের গতিবিধির উপরে নজর রাখা। তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আলফার বিচারসভায় তার বিচার চলছে। তিনি এও দাবি করেন, কুলদীপের মুক্তির বিনিময়ে আলফা কোনও মুক্তিপণ চায়নি। গোটাটাই কুলদীপের বাবা রত্নেশ্বর, প্রাক্তন আলফা কম্যান্ডার জিতেন দত্ত, বিধায়ক ও প্রাক্তন আলফা ভাস্কর শর্মা এবং বিধায়ক বলিন চেতিয়ার চক্রান্ত। কুলদীপকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আলোচনাপন্থী আলফা, মরাণ সংগঠন ও অন্যান্য সংগঠনগুলি অনুরোধ জানাতে। জনমতের চাপে পড়েই কুলদীপকে মুক্তি দেয় পরেশবাহিনী। আজ তিনি চাংলাংয়ে হাজির হন। এ কদিন তিনি কোথায়-কী ভাবে ছিলেন-তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ। সেই সঙ্গে তাঁর চিকিৎসাও শুরু হয়।
পাশাপাশি, কার্বি আংলংয়ের নেপালিজুরিতে পাথরকুচি কারখানায় কর্মরত ছ'জনকে অপহরণ করে কেপিএলটি জঙ্গিরা। পরে এক জন বাদে ৫ জনকে ছেড়েও দেয় তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy