উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে পুলিশের গুলিতে সম্প্রতি মারা গিয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাঁচ ব্যক্তি। যা নিয়ে লোকসভায় সরব হয়েছেন প্রিয়ঙ্কা-রাহুল গান্ধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি শাসনে গত দশ বছরে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা বাড়ছে। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু আজ অবশ্য লোকসভায় মন্তব্য করেছেন, ‘‘কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা হয়ে থাকে। কিন্তু মোটের উপর ভারতে সংখ্যালঘু সমাজ নিরাপদেই রয়েছেন।’’
দু’দিন ধরে চলা সংবিধান বিতর্কে গতকাল সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব উত্তরপ্রদেশ তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনার উল্লেখ করে মোদী সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন। বিরোধীদের দাবি, গত দশ বছরে ভারতে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সংখ্যালঘু সমাজ। গতকাল প্রিয়ঙ্কা ও আজ রাহুল সংবিধান বিতর্কে যোগ দিয়ে সম্ভলে পুলিশি নির্যাতন নিয়ে সরব হন। সম্ভলের সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জিয়াউর রহমান আজ লোকসভায় দাবি করেন, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সেখানে বিনা কারণে গুলি চালিয়ে স্থানীয় পাঁচজনকে হত্যা করেছে। ঘটনার দিন তিনি সেখানে উপস্থিত না থাকলেও তাঁর নামে মামলা হয়েছে। সম্ভলের একটি মসজিদে লাউডস্পিকার বাজানোয় সেখানকার ইমামের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করেছে। সব মিলিয়ে সংবিধান গ্রহণের ৭৫ বছরে দেশে সংখ্যালঘু সমাজ যে নিরাপদে নেই— সেই বিষয়টি তুলে ধরে সরব হয়েছে বিরোধীরা।উত্তরপ্রদেশের সহরানপুরের কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ বলেছেন, ‘‘মুসলিমদের এমন অবস্থা যে ঘরে থাকলে দাঙ্গাকারীদের হাতে মরতে হচ্ছে, পথে নামলে পুলিশের গুলিতে।’’ কিষানগঞ্জের সাংসদ মহম্মদ জাভেদের অভিযোগ, ‘‘ওয়াকফ বিল আনা হচ্ছে মুসলিমদের সম্পত্তি কেড়ে নিতে। ’’
সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গে ইউরোপ ও ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির উদাহরণ টেনে আনেন রিজিজু। তিনি বলেন, ‘‘একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৪৮ শতাংশ মানুষ বঞ্চনার শিকার। যাঁদের অধিকাংশ মুসলিম। ইন্দোনেশিয়ায় মুসলিমরা সংখ্যাগুরু। সেখানে শিয়া ও আহমেদিয়া সম্প্রদায় অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সকলেই জানেন। আফগানিস্তানে শিখ, হিন্দু ও খ্রিস্টানদের সংখ্যা কোথায় নেমে এসেছে! তিব্বত, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার হলে তাঁরা নিরাপত্তার জন্য ভারতে চলে আসেন।’’ রিজিজুর কথায়, ‘‘ভারত নিরাপদ দেশ। তাই এ দেশে সকলে আশ্রয়ের জন্য আসেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)