কুলভূষণ যাদব। ফাইল চিত্র
পাকিস্তানের জেলে বন্দি কুলভূষণ যাদবের সঙ্গে তাঁর মা এবং স্ত্রীর সাক্ষাতের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানকে তীব্র আক্রমণ করল নয়াদিল্লি। অভিযোগ, কুলভূষণের পরিবারের উপর মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। সাক্ষাতের আগে টিপ, বালা, মায় মঙ্গলসূত্রও খুলে রাখতে বাধ্য করে তাঁদের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করা হয়েছে। এমনকী কুলভূষণের স্ত্রী-র জুতোজোড়া পর্যন্ত পরে ফেরত দেওয়া হয়নি! বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে চাপ দিয়ে কুলভূষণকে কথা বলানো হয়েছে।
কুলভূষণের মা এবং স্ত্রী-র সঙ্গে কথা বলেই এই সব সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে ভারত। গত কাল পাকিস্তানে বন্দি কুলভূষণের সঙ্গে কথা বলে ভারতে ফেরার পরে আজ তাঁদের সঙ্গে তিন ঘণ্টা কথা বলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর এবং সাউথ ব্লকের সংশ্লিষ্ট অফিসারেরা। তাঁদের অভিজ্ঞতা শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান শুধু কথার খেলাপ করেনি, তাদের জন্য গত কালের প্রক্রিয়াটিরই বিশ্বাসযোগ্যতা থাকছে না।
দূতাবাসের প্রবেশাধিকারের প্রসঙ্গ নিয়ে গত কালই সরব হয়েছিল নয়াদিল্লি। আজ ইসলামবাদের বিরুদ্ধে আনা ৭ দফা অভিযোগের মধ্যে প্রথমেই বলা হয়েছে যে, কুলভূষণের মা ও স্ত্রী-র সঙ্গে সাক্ষাৎকারের বিষয়টি দু’দেশের কূটনৈতিক চ্যানেলে কথাবার্তার মাধ্যমে স্থির হয়েছিল। কোন প্রক্রিয়ায় এ’টি হবে, তা নিয়েও একমত হয় দু’দেশ। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে ভোল বদলে ফেলেছে ইসলামাবাদ।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমারের বক্তব্য, ‘‘যে বোঝাপড়া হয়েছিল, তাকে চার রকম ভাবে খণ্ডন করেছে পাকিস্তান। প্রথমত, স্পষ্ট কথা হয়েছিল মা এবং স্ত্রী-র ধারেকাছে সংবাদমাধ্যমকে ঘেঁষতে দেওয়া হবে না। দেখা গেল, পাক সংবাদমাধ্যম তাঁদের বিব্রতই শুধু করেনি, কুলভূষণ সম্পর্কে মিথ্যা আরোপও দিতে শুরু করেছে। দুই, নিরাপত্তার নামে পরিবারের সদস্যদের মঙ্গলসূত্র, টিপ এবং হাতের বালা পর্যন্ত খুলে রাখতে বলা হয়। জামাকাপড়ও পাল্টানো হয়। এতে তাঁদের সংস্কৃতি এবং ধর্মবিশ্বাসকে ছোট করা হয়েছে। তিন, তাঁদের মাতৃভাষায় কথা বলতে দেওয়া হয়নি। বললেই বাধা দেওয়া হয়েছে। এবং চার, কোনও এক অজ্ঞাত কারণে কুলভূষণের স্ত্রী-র জুতোজোড়া বৈঠকের পরে ফেরতও দেওয়া হয়নি!’’
অভিযোগ উড়িয়ে পাক বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, কুলভূষণের স্ত্রীর জুতোয় ‘কিছু’ রয়েছে। তাই সেটি ফেরত দেওয়া হয়নি। এই বক্তব্য ‘নিতান্ত হাস্যকর’ বলে দাবি ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের।
কুলভূষণকে যে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে, সে কথাও আজ জানিয়েছেন রবীশ কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যা শুনলাম, তাতে স্পষ্ট যে, কুলভূষণ প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছেন এবং আতঙ্কের পরিবেশে কথা বলেছেন। তাঁর বেশির ভাগ মন্তব্যই চাপ দিয়ে বলানো। শরীর-স্বাস্থ্যও যে ভাল নেই, তা-ও স্পষ্ট।’’
কূটনৈতিক শিবিরের একটি অংশের মত, কুলভূষণ-প্রশ্নে পাক-বিরোধিতার স্বর কতটা চড়ানো হবে, তা আগে ঠিক করা দরকার। না হলে নিজেদেরই মুখ পোড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। যদিও অজিত ডোভাল ও তাঁর ঘনিষ্ঠেরা এমন তত্ত্ব মানতে নারাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy