Advertisement
E-Paper

উন্নাও ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার

উন্নাওয়ের নাবালিকাকে গণধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে সেঙ্গারের বিরুদ্ধে। পকসো আইনে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। 

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৫:১৯
উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত কুলদীপ সেঙ্গার। —ফাইল চিত্র

উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত কুলদীপ সেঙ্গার। —ফাইল চিত্র

২০১৭ সালে উন্নাওয়ে নাবালিকা ধর্ষণের দায়ে প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারকে দোষী সাব্যস্ত করল দিল্লির আদালত। ধর্ষণ, ভয় দেখানো-সহ শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন বিরোধী পকসো আইনের একাধিক ধারায় বহিষ্কৃত বিজেপি নেতাকে সোমবার দোষী সাব্যস্ত করেছে দিল্লির তিসহাজারি আদালত। আগামী ১৯ তারিখ সাজার মেয়াদের উপর শুনানি। তবে এই মামলায় অন্য অভিযুক্ত শশী সিংহকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সেঙ্গারের বিরুদ্ধে নির্যাতিতাকে গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ-সহ অন্য মামলাগুলি চলছে।

২০১৭ সালে উন্নাওয়ের নাবালিকাকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে সেই সময় উত্তরপ্রদেশের বাঙ্গেরমউ কেন্দ্রের চার বারের বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার ও শশীর বিরুদ্ধে। সেই মামলায় ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কিছু দিনের মধ্যেই বিজেপি তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে। পুলিশের চার্জশিটের ভিত্তিতে পকসো আইনে ১২০বি (ষড়যন্ত্র), ৩৬৩ (অপহরণ) ৩৬৬ (অপহরণ ও বিবাহের জন্য বাধ্য করা) ৩৭৬ (ধর্ষণ)-সহ একাধিক ধারায় চার্জ গঠন করে আদালত। তার পর আজ সেঙ্গারকে দোষী সাব্যস্ত করেন তিসহাজারি আদালতের বিচারক ধর্মেশ শর্মা।

সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে একটি চিঠি লিখেছিলেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা। সেই চিঠির ভিত্তিতেই এ বছরই অগস্ট মাসে তিনি নির্দেশ দেন, এই সম্পর্কিত পাঁচটি মামলাই উত্তরপ্রদেশের আদালত থেকে দিল্লির তিসহাজারি আদালতে সরিয়ে আনতে হবে। এ ছাড়াও প্রতিদিন শুনানি করে ৪৫ দিনের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশও দেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি।

দিল্লি আদালতে রুদ্ধদ্বার শুনানি হয় এই মামলার। শুনানি চলাকালীন নির্যাতিতার পক্ষে সাক্ষী ছিলেন ১৩ জন। ৯ জন সাক্ষী ছিলেন বিরোধী পক্ষের। এই দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও তথ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণের পাশাপাশি, দিল্লির এইমস হাসপাতালে একটি বিশেষ আদালতও গঠন করা হয়। গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ওই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন নির্যাতিতা। তাঁর বয়ান নেওয়ার জন্য ওই বিশেষ আদালত গঠন করা হয়।

কুলদীপ সেঙ্গার প্রভাবশালী হওয়ায় নির্যাতিতা নাবালিকা (বর্তমানে তরুণী) ও তাঁর পরিবারের উপর গোড়া থেকেই নানা ভাবে অত্যাচার চলেছে। তাঁদের নানা ভাবে ভয় দেখানো তে ছিলই, তার সঙ্গে পরিবারের লোকজন ও অভিযুক্তকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। প্রথমত, ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগ তুলে অস্ত্র আইনে নির্যাতিতার বাবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু তার ৬ দিনের মাথায় ৯ এপ্রিল পুলিশি হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে কুলদীপ সেঙ্গারের অঙ্গুলিহেলনেই পুলিশ এই কাণ্ড ঘটায়।

তখনও দোষী সাব্যস্ত হননি। ‘নারী সুরক্ষা’র কথা শোনাচ্ছেন কুলদীপ সেঙ্গার। —ফাইল চিত্র

এর পর এ বছরের ২৮ জুলাই পরিবারের সঙ্গে রায়বরেলীতে যাওয়ার পথে মারাত্মক গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন নির্যাতিতা। গাড়িতে থাকা তাঁর দুই কাকীমার মৃত্যু হয়। তবে প্রাণে বেঁচে যান নির্যাতিতা। লখনউয়ের একটি হাসপাতাল থেকে তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে দিল্লির এইমস হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এই ঘটনাতেও অভিযোগ ওঠে, কুলদীপ সেঙ্গার ও তাঁর অনুগামীদের পরোক্ষ মদতে পরিকল্পিত ভাবে গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে নির্যাতিতাকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল। সেঙ্গারের বিরুদ্ধে এই দু’টি মামলাই চলছে।

তবে মূল ধর্ষণের মামলায় কুলদীপ সেঙ্গার দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিজনরা। তাঁর সাজার মেয়াদ কী হবে, তা নিয়ে ১৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনবে আদালত। এ বছরের অগস্টেই পকসো আইন সংশোধন করে সর্বোচ্চ সাজা হয়েছে ফাঁসি বা মৃত্যুদণ্ড। নির্যাতিতার আইনজীবী সর্বোচ্চ সাজা চাইতে পারেন বলেই সূত্রের খবর।

Unnao Rape Kuldeep Sengar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy