Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Jammu and Kahsmir

জবাব দিক সেনা, দাবি নিহতদের পরিবারের

পুঞ্চের সাম্প্রতিক হামলায় নিহত হওয়া পাঁচ সেনার চার জনই পঞ্জাবের। দেবাশিস বিশ্বলের বাড়ি ওড়িশায়। চারিক গ্রামের কুলবন্তের স্ত্রী ও দেড় বছরের মেয়েও আছে।

Terror Attack.

গ্রেনেড হামলায় বিধ্বস্ত সেনা ট্রাক। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি ও শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৫
Share: Save:

বছর চারেকের ভাইপোকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কুলবন্ত সিংহের ভাই। জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চে বৃহস্পতিবারের জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে কুলবন্তের। পঞ্জাবের মোগা জেলার চারিক গ্রামে দাঁড়িয়ে তাঁর ভাই বললেন, সেনা ও সরকারের উচিত এই হামলার যোগ্য জবাব দেওয়া।

পুঞ্চের সাম্প্রতিক হামলায় নিহত হওয়া পাঁচ সেনার চার জনই পঞ্জাবের। দেবাশিস বিশ্বলের বাড়ি ওড়িশায়। চারিক গ্রামের কুলবন্তের স্ত্রী ও দেড় বছরের মেয়েও আছে। সম্প্রতি বাড়ি এসেছিলেন তিনি। দাদাকে বলে গিয়েছিলেন সময় মতো যেন তাঁর ছেলের টিকাকরণ হয়। সকাল থেকেই বাড়িতে যাতায়াত করছেন গ্রামবাসীরা। এক প্রতিবেশী জানালেন, কুলবন্তের বাবাও কাজ করতেন সেনায়। কার্গিল যুদ্ধে নিহত হন তিনি। তখন কুলবন্তের বয়স দু’বছর। ভাটিন্ডার বাঘা গ্রামে আর এক নিহত জওয়ান সেবক সিংহের দিদির কান্না থামছে না। একই দৃশ্য বাটালার তালওয়ান্ডি বার্থ গ্রামে হরকিষেণ সিংহের বাড়িতে। হামলার কিছু ক্ষণ আগে স্ত্রী ও বছর আড়াইয়ের মেয়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলেছিলেন তিনি। এখনও হরকিষেণের মৃত্যুর কথা যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁর স্ত্রী। হাবিলদার মণদীপ সিংহের বাড়ি লুধিয়ানায়। সেখানেও উঠছে উপযুক্ত জবাবের দাবি। নিহত জওয়ানদের পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাধীনতা সংগ্রামে পঞ্জাবিদের অনেক অবদান ছিল। সেই স্বাধীনতা বজায় রাখতেও পঞ্জাবের জওয়ানেরা সীমান্ত রক্ষা করছেন।’’

আজ পুঞ্চে সেনার ডেল্টা ফোর্সের সদর দফতরে নিহত জওয়ানদের সম্মান জানান সেনা ও পুলিশের কর্তারা। পরে জওয়ানদের দেহ বাড়িতে পাঠানো হয়।

ওড়িশার পুরী জেলার সাক্ষীগোপালে দেবাশিস বিশ্বলের শেষকৃত্যে আজ জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। হাজির ছিলেন রাজ্যপাল গণেশি লাল ও অন্য বিশিষ্টেরা। দেবাশিসের স্ত্রী ও সাত মাসের মেয়ে রয়েছে। পরিবারের জন্য ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।

বৃহস্পতিবারের হামলার দায় আজ স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন ‘পিপলস অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট’। গোয়েন্দাদের মতে, এটি পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ ই মহম্মদের শাখা। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে, এই হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। এ দিনও বাটা ডোরিয়া, ভিম্বের গলি, টোটা এলাকা ঘিরে তল্লাশি চালিয়েছে সেনা। এমআই হেলিকপ্টার, ড্রোন, প্রশিক্ষিত কুকুরের মাধ্যমে জঙ্গিদের সন্ধান চালানো হচ্ছে। সেনা সূত্রে খবর, আটক ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হামলাকারীদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। রাজৌরি ও পুঞ্চের মাঝামাঝি এলাকায় এই হামলা যারা চালিয়েছে তারা অন্তত এক বছর ধরে ওই এলাকায় উপস্থিত ছিল বলে ধারণা বাহিনীর। কারণ, ওই এলাকার ভূপ্রকৃতি সম্পর্কে ভাল জ্ঞান ছাড়া এমন হামলা চালানো কঠিন।

সেনা সূত্রের মতে, ওই এলাকায় জঙ্গি সংগঠন ‘জম্মু-কাশ্মীর গজ়নভি ফোর্স’ সক্রিয়। তাদের কমান্ডার রফিক আহমেদ ওই এলাকারই বাসিন্দা। তবে এই হামলায় লস্কর ই তইবার হাত থাকার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি বলে মত সেনার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jammu and Kahsmir Terrorist Attack Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE