বাড়িতে শৌচালয় না থাকায় স্বামীর ঘর ছেড়েছেন বধূ, শৌচালয় নেই বলে বিয়ে ভেঙেছেন পাত্রী—‘স্বচ্ছ ভারত’-এ এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। কিছু সামনে এসেছে, কিছু আসেনি। কিন্তু এ বারের প্রতিবাদ এক-আধ জনের নয়, ২৬১ জন স্কুল ছাত্রী। পর্যাপ্ত শৌচালয়ের দাবিতে আবেদন করেও ফল মেলেনি, তাই কিশোরীরা স্কুল হস্টেল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে জামশেদপুর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে, সরাইকেলা-খরসঁওয়া জেলার ইছাগড় কস্তুরবা গাঁধী গার্লস স্কুলে।
হস্টেলের ২৬১ জন ছাত্রীর জন্য মাত্র পাঁচটি শৌচাগার। অর্থাৎ, এক একটি শৌচালয়ের উপর নির্ভরশীল গড়ে ৫২ জনেরও বেশি ছাত্রী। বাধ্য হয়ে বেশির ভাগ ছাত্রীকেই প্রাতঃকৃত্য সারতে যেতে হতো মাঠে। অভিযোগ, সেই সময় স্থানীয় কিছু যুবক নানা ভাবে তাদের উত্যক্ত করত। অভিযোগ, কিছু ছাত্রী যৌন হয়রানিরও শিকার হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে পুলিশ, অভিযোগ জানিয়ে কোনও ফল হয়নি। পুলিশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে তার পর ছেড়ে দেয়। ফলে বেড়ে যায় হয়রানিও। শেষ পর্যন্ত আবাসিক স্কুলটির ওই ২৬১ জন আদিবাসী ও পিছড়ে বর্গের ছাত্রী জোটবদ্ধ হয়ে হস্টেল ছেড়ে বাড়ি চলে গেল। বন্ধ পঠন-পাঠন।
ইছাগড় কস্তুরবা গাঁধী গার্লস আবাসিক স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। ঝাড়খণ্ডের মেয়েদের বহু স্কুলেই শৌচালয়ের সংখ্যা কম। কিন্তু পুরো হস্টেল ফাঁকা করে সমস্ত আবাসিক ছাত্রীর চলে যাওয়ার ঘটনা বিরল। হস্টেল সুপারকে তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, শৌচালয় সমস্যার সমাধান না হলে তারা হস্টেলে ফিরবে না। ছাত্রীদের বক্তব্য, অনেক দিন ধরেই তারা অভিযোগ জানিয়ে আসছে। কিন্তু সকলেই উদাসীন। স্কুল হস্টেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অনিতা বারির দাবি, ‘‘এই নিয়ে ইছাগড় থানায় অভিযোগও করা হয়েছে। কয়েক জন স্থানীয় যুবককে আটকও করেছিল পুলিশ। পরে ছেড়ে দেয়। কিন্তু ছাত্রীদের সমস্যার সমাধান হয়নি।’’
হস্টেল ছেড়ে সব ছাত্রীর চলে যাওয়ার পরে অবশ্য টনক নড়েছে জেলা প্রশাসনের। জেলাশাসক চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘স্কুল শীঘ্রই চালু হবে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আগামী কালই স্কুলের ছাত্রী ও অভিভাবকদের স্কুলে আসতে বলা হয়েছে। অপর্যাপ্ত শৌচালয় থেকে শুরু করে যে সব সমস্যা আছে সব কিছুরই দ্রুত সমাধান করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy