লাদাখে ধৃত পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুকের ‘পাক-যোগ’ রয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন লাদাখ পুলিশের ডিজি এসডি সিংহ জামওয়াল। সম্প্রতি পাকিস্তানের হয়ে চরবৃত্তি করার অভিযোগে এক জন গ্রেফতার হন। ডিজি জানান, ওই ব্যক্তি ওয়াংচুকের বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচির ভিডিয়ো সীমান্তের ও পারে পাঠাতেন।
পৃথক রাজ্যের দাবিতে বিক্ষোভের জেরে গত বুধবার অশান্ত হয়েছিল লাদাখ। ওই অশান্তির মাঝে চার জনের মৃত্যু হয়। জখম হন আরও অনেকে। ওই ঘটনার পরে শুক্রবার ওয়াংচুককে গ্রেফতার করে লাদাখ পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু করা হয়। গ্রেফতারির পরে লাদাখের বাইরের একটি জেলে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। বর্তমানে রাজস্থানের জোধপুরের একটি জেলে রাখা হয়েছে ওয়াংচুককে। শনিবার লাদাখের ডিজিপি জানান, ওয়াংচুকের জন্যই গত বুধবার ওই অশান্তি ছড়িয়েছিল।
‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমায় আমির খানের ‘র্যাঞ্চো’ চরিত্রটি বানানো হয়েছিল পরিবেশকর্মী ওয়াংচুকের আদলেই। তাঁর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে শনিবার লাদাখ পুলিশের ডিজি বলেন, “তদন্তে (ওয়াংচুকের বিরুদ্ধে) যা পাওয়া গিয়েছে, তা এখনই প্রকাশ্যে আনা যাবে না। তদন্ত প্রক্রিয়া এখনও চলছে। আপনারা চাইলে তাঁর প্রোফাইল এবং অতীত জানতে চান, তা সবটাই ইউটিউবে রয়েছে।” ওয়াংচুকের বিভিন্ন বক্তব্য পরিস্থিতি অশান্ত করতে উসকানি দিয়েছিল বলেও দাবি পুলিশের। লাদাখের ডিজি এ প্রসঙ্গে মন্তব্যের সময় নেপাল, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার অস্থিরতার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন। পুলিশের বক্তব্য, এ সব বিষয়ে কথা বলার সময়ে ওয়াংচুকের বক্তৃতা উসকানির কাজ করেছিল।
আরও পড়ুন:
বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন (এফসিআরএ) লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে লাদাখের এই পরিবেশকর্মীর বিরুদ্ধে। সেটিরও তদন্ত চলছে। পুলিশের বক্তব্য, ওয়াংচুকের নিজস্ব কিছু উদ্দেশ্য ছিল। সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, ডিজি বলেন, “আমাদের হাতে এক জন ‘পাকিস্তানি ইন্টেলিজেন্স অপারেটিভ’ (পিআইও) ধরা পড়েছেন। তিনি ওয়াংচুকের বিভিন্ন বিক্ষোভের ভিডিয়ো সীমান্তের ও পারে পাঠাতেন।” এক পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে তাঁর যোগ দেওয়া এবং বাংলাদেশ সফরের কথাও উল্লেখ করেন লাদাখ পুলিশের ডিজি। ওয়াংচুকের বেশ কিছু বিদেশ সফরকে ‘সন্দেহজনক’ বলে ব্যাখ্যা করছেন তিনি।
বস্তুত, লাদাখকে রাজ্যের স্বীকৃতির দাবিতে দীর্ঘ দিন লড়াই করছেন ইঞ্জিনিয়ার, গবেষক তথা সমাজকর্মী ওয়াংচুক। বার বার অনশনও করেছেন তিনি। তবে গত বুধবার রাজ্যের স্বীকৃতির দাবিতে লেহ্তে বিক্ষোভ দেখান বেশ কয়েক জন। ওই বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শনিবার ডিজিপি জানান, ওই হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৫০ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।