আশিস মিশ্র।
লখিমপুর খেরিতে প্রতিবাদী কৃষকদের গাড়ি দিয়ে পিষে দেওয়ার মামলায় গত কাল জামিন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির পুত্র আশিস। ইলাহাবাদ হাই কোর্টের লখনউ বেঞ্চ তাঁর জামিন মঞ্জুরের পরে স্বস্তি ফেরলেও এখনও জেল থেকে মুক্তি পাননি তিনি। এ নিয়েই উদ্বেগ বাড়ছে আশিস ও তাঁর পরিজনের।
লখিমপুর পুলিশ আশিসের বিরুদ্ধে ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩০২, ৩০৭, ৩২৬, ৩৪, ৪২৭ এবং ১২০বি ধারায় মামলা রুজু করেছিল। এর পাশাপাশি অস্ত্র আইনেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। চার্জশিটেও আইনের এই ধারাগুলির উল্লেখ ছিল।
কিন্তু হাই কোর্ট জামিনের যে নির্দেশ জারি করেছে তাতে ৩০২ ও ১২০ বি অনুচ্ছেদের কোনও উল্লেখ নেই। এর মধ্যে ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগ এবং ১২০বি ধারা অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে লিপ্ত থাকলে অভিযোগ করা হয়।
কিন্তু জামিনের নির্দেশনামায় এই দু’টি ধারার উল্লেখ না থাকায় জেলমুক্তি ঘটেনি মন্ত্রিপুত্রের।
এই পরিস্থিতিতে আশিসের আইনজীবীরা ফের আদালতের দ্বারস্থ হবেন। যাতে জামিনের নির্দেশপত্রে ১২০বি ও ৩০২ ধারা যুক্ত করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত কাল জামিন দেওয়ার আগে বিচারপতি আশিসের বিরুদ্ধে আনা কয়েকটি ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আদালত জানায়, অভিযোগপত্রে প্রতিবাদীদের উদ্দেশে গুলি চালানোর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু কোনও নিহতের কিংবা আহতের শরীরে গুলির চিহ্নের উল্লেখ ছিল না তদন্তে। এমনকি আশিস যখন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারী অফিসারের মুখোমুখি হন, সেই সময়ে চার্জশিট প্রায় তৈরি। যদিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত কৃষকদের দাবি, যে গাড়িটি দিয়ে পিষে দেওয়া হয়, তার মধ্যেই ছিলেন মন্ত্রিপুত্র।আশিসের জামিন মঞ্জুর হওয়ায় হতাশ নিহত কৃষকদের পরিজন। এমনই এক নিহত কৃষক গুরবিন্দর সিংহের বাবা সুখবিন্দর জানিয়েছেন, এত তাড়াতাড়ি আশিসের জামিন পাওয়া মোটেই শুভ লক্ষ্মণ নয়। এর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, যোগী আদিত্যনাথের সরকারের কাছ থেকে তাঁদের কোনও প্রত্যাশা ছিল না। এখনও সুবিচারের আশা রাখছেন না তিনি। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, নিজের মন্ত্রিসভার সদস্যের পুত্র কৃষক হত্যায় জড়িত থাকলেও অজয়কে সরাননি প্রধানমন্ত্রী। ভোটের আবহে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছেন। আদালতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে আরও এক নিহত কৃষকের বাবা জানিয়েছেন, তাঁরা বিচার পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছে।
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার নির্বাচন পর্ব শুরুর মধ্যেই আশিসের জামিনের ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy