Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দু’দশকে লালুপ্রসাদ অভ্যস্ত সিবিআইয়ে

লালু রাঁচী এসেছেন সিবিআইয়ের কারণেই। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে দেওঘর ট্রেজারির মামলায় বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজিরা দিয়ে রাজ্য অতিথি আবাসে ফিরেই বসলেন সাংবাদিকদের মুখোমুখি।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রাঁচী শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৭
Share: Save:

গত কুড়ি বছরে ‘সিবিআই’ নামে তিনি এতটাই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন যে আজকাল আর ওই নাম শুনলে লালু প্রসাদের আলাদা কোনও অনুভূতি হয় না। আজ যখন তাঁর পটনার বাড়িতে সিবিআই হানা চলছে তখন সওয়া তিনশো কিলোমিটার দূরে, রাঁচীতে বসে আরজেডি-প্রধান নিজেই সে কথা জানান। তিনি বলেন, ‘‘গত ২০ বছর ধরে তো সিবিআইকে সামলাচ্ছি। এখন অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।’’

লালু রাঁচী এসেছেন সিবিআইয়ের কারণেই। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে দেওঘর ট্রেজারির মামলায় বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজিরা দিয়ে রাজ্য অতিথি আবাসে ফিরেই বসলেন সাংবাদিকদের মুখোমুখি। সিবআই তদন্তের জেরেই ১৯৯৭-এর জুলাইয়ে চাইবাসা ট্রেজারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন লালু। তার জেরে মুখ্যমন্ত্রীর তখ্ত ছাড়ার পরে আজও সংসদ বা বিধানসভায় পা রাখার অধিকার নেই তাঁর। দু’দশক সিবিআইয়ের সঙ্গে ঘর করার দাবি তিনি করতেই পারেন।

মুখে নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহদের উদ্দেশে হুঙ্কার দিলেও লালুর শরীরী ভাষায় কিন্তু এদিন বার বার উত্তেজনা ফুটে বেরিয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে পকেট থেকে বার করলেন দু’পাতার একটি নোট। সেই কাগজ দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই কাগজে সব নোট করে এনেছি। বিএনআর চাণক্য নিয়ে কোনও বেআইনি কিছু হয়নি। মোদী সরকার সিবিআই দেখিয়ে আমাকে ভয় দেখাতে চাইছে।’’

লালু জানান, সকালে আদালতে যাওয়ার পথেই সিবিআই হানার কথা তিনি শোনেন। তাঁর কথায়, ‘‘সিবিআই অফিসারদের কোনও দোষ তো আমি দেখছি না। মোদী যা নির্দেশ দিয়েছেন তাই করছে সিবিআই।’’ তাঁর দাবি, বাজপায়ীর আমলেই গঠিত হয়েছিল আইআরসিটিসি। ২০০৩-এ রাঁচী, পুরীর বিএনআর হোটেল ও দিল্লির যাত্রীনিবাস আইআরসিটিসি-কে লিজে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমি রেলমন্ত্রী হওয়ার পরে বিএনআর হোটেল দু’টি একটি বেসরকারি সংস্থাকে টেন্ডারের মাধ্যমে পনেরো বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়। কোনও গড়বড় হয়নি।’’

আগামী ১১ জুলাই ফের রাঁচীর সিবিআই আদালতে হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। তখন ফের দেখা হবে জানিয়ে লালুপ্রসাদ বলেন, ‘‘রাতে পটনা ফিরে স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করব, কী মহামূল্যবান কাগজ সিবিআই পেল!’’

লালুর বলা শেষ, শুরু হবে প্রশ্নোত্তর পর্ব। এই সময়ে এক টিভি চ্যানেলের সাংবাদিককে দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন লালু-তনয় তেজস্বীপ্রসাদ। তাঁকে বেরিয়ে যেতে বলেন তেজস্বী। বলেন, ‘‘আপনারা তো প্রধানমন্ত্রী পনেরো লক্ষের স্যুট পরলে প্রশ্ন করেন না!’’ তাঁকে থামাতে বাবা বলেন, ‘‘চুপ করো। খবর হয়ো না।’’ তেজস্বীকে থামানোর চেষ্টা করেন দলের প্রবীণ নেতা আব্দুল বারি সিদ্দিকিকে। তাতেও গজগজ থামেনি তেজস্বীর। এর জেরে সাংবাদিকদের প্রশ্ন না নিয়েই উঠে যান লালু। ওই চ্যানেলের আর এক সাংবাদিক এ দিন আরজেডি সমর্থকদের হাতে মার খান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE