আজ না হয় কাল সংসদের যৌথ অধিবেশন ডেকেই হয়তো জমি আইন সংশোধন বিল পাশ করাতে চাইবে সরকার।
কিন্তু আইনের সংশোধন নিয়ে শাসক দলের অন্দর থেকেই যে ভাবে অসন্তোষ উগড়ে উঠছে তাতে অস্বস্তি জিইয়েই থাকছে সরকারের। কেন্দ্রের বিল নিয়ে আলোচনার জন্য যে সংসদীয় যৌথ কমিটি গড়া হয়েছে, আজ তার বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকেই জমি বিল নিয়ে সরকারের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আরএসএসের অনুগামী সংগঠন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ। সূত্রের খবর, কমিটিতে বিজেপি সদস্যদের উপস্থিতিতে স্বদেশি মঞ্চের নেতা অশ্বিনী মহাজন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মোদী সরকারের সংশোধনগুলি কৃষকবিরোধী। তাঁদের দাবি, কৃষকদের সম্মতি ছাড়া কোনও ভাবেই জমি অধিগ্রহণ করা চলবে না। দ্বিতীয়ত, জমি অধিগ্রহণের ফলে কতগুলো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হল, কত জনের জীবিকা নিয়ে সঙ্কট তৈরি হল তা-ও সমীক্ষা করে দেখতে হবে। তা ছাড়া জমি অধিগ্রহণের পর পাঁচ বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শুরু না হলে, সেই জমিও ফেরত দিতে হবে সরকারকে। এ-ও জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়কের উভয় পাশে এক কিলোমিটার করে এলাকায় শিল্প করিডর গঠনের জন্য সরকার যে ভাবে জমি অধিগ্রহণের ক্ষমতা নিজের হাতে আনতে চাইছে স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ তারও বিরোধিতা করেছে। অশ্বিনী মহাজন আজকের বৈঠকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এ ভাবে শিল্প করিডর গড়ার প্রস্তাবটাই সন্দেহজনক। দুর্নীতির গন্ধ রয়েছে এখানে।
বৈঠক থেকে বেরিয়েও একই মত জানান স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের এই নেতা। তিনি বলেন, ‘‘ইউপিএ জমানায় আইনটিও তড়িঘড়ি পাশ করা হয়েছিল। বর্তমান সরকারেরও যেন অসীম তাড়া দেখছি। অথচ, মোদী সরকার যে সংশোধনগুলি প্রস্তাব করছে তার অধিকাংশের ধারণাই ভ্রান্ত।’’
মজার বিষয় হল, যৌথ কমিটির সামনে এখনও পর্যন্ত ৫০২টি সংগঠন (অণ্ণা হজারের মতো ব্যক্তি ধরে) তাদের মত জানিয়েছে। তার মধ্যে বণিকসভা ফিকি এবং সিআইআই ছাড়া ৫০০ টি সংগঠনই সংশোধন বিলের কোনও না কোনও ধারা নিয়ে আপত্তি তুলেছে। তবে রাজনৈতিক শিবিরের মতে, আসল গোলমাল বাঁধবে কমিটির রিপোর্ট চূড়ান্ত করার সময়। কমিটিতে ৩০ জন সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে ১১ জন বিজেপি-র সাংসদ। সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে রিপোর্ট পাশ করিয়ে নিতে গেলে ১৬ জনের সমর্থন প্রয়োজন। কমিটিতে বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল, সপা, বসপা ও বাম সদস্য ছাড়া আরও ছোট দলগুলির থেকে আরও ৬ জন সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচ জনের সমর্থন সরকারের প্রয়োজন। সে দিক থেকে শিবসেনা, এনসিপি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ভূমিকা এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এরা বিলের বিরোধিতা করলে যৌথ কমিটির রিপোর্টও সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে পাশ করানো মুশকিল হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy