সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবইকে ‘জুতো’ ছুড়ে মারায় অভিযুক্ত আইনজীবী রাকেশ কিশোরকে ছেড়ে দিল দিল্লি পুলিশ। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ওই আইনজীবীকে জেরা করার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে কোনও রকম অভিযোগ না পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত।
পিটিআই সূত্রে খবর, সোমবার শীর্ষ আদালতে একটি মামলার শুনানি চলাকালীন আচমকাই প্রধান বিচারপতির দিকে ‘জুতো’ ছুড়ে মারেন এজলাসে উপস্থিত থাকা এক আইনজীবী। আকস্মিক এমন ঘটায় হকচকিয়ে যান এজলাসে উপস্থিত সকলেই। সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীরা সেই আইনজীবীকে ধরে ফেলেন এবং তাকে কোর্টরুমের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়াও সনাতন ধর্মকে কন্দ্র করে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। যদিও এত কিছুর পরেও শান্ত এবং স্থির থাকেন প্রধান বিচারপতি বিআর গবই। নিরাপত্তাকর্মীরা ওই ব্যক্তিকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরে অন্য আইনজীবীদের নিজেদের সওয়াল চালিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন প্রধান বিচারপতি। এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই সব দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। আমরা বিভ্রান্ত নই। এ সব ঘটনা আমার উপর প্রভাব ফেলতে পারে না।” আইনজীবীর এমন কাণ্ডের জেরে কিছুক্ষণের জন্য বিঘ্নিত হয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসের কাজকর্ম।
প্রধান বিচারপতির উপর এমন আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সমাজে এই ধরনের নিন্দনীয় কাজের কোনও জায়গা নেই।’’ একই সঙ্গে ঘটনার সময় দেশের প্রধান বিচারপতির ভূমিকারও প্রশংসা করেন তিনি। তিনি আরও জানান, “সুপ্রিম কোর্টের প্রাঙ্গণে তাঁর উপর হামলা প্রত্যেক ভারতীয়কে ক্ষুব্ধ করেছে। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’ প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি এমন ঘটনার নিন্দা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এটি অত্যন্ত জঘন্য কাজ। কার্যত ভারতের সংবিধানের উপর হামলা।” মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় একই সুরে এই ঘটনার নিন্দা করেছেন, কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীও। তাঁর কথায়, “প্রধান বিচারপতির উপর আক্রমণের নিন্দা করার কোনও শব্দ নেই। এটি কেবল তাঁর উপরই নয়, আমাদের সংবিধানের উপরও আক্রমণ।’’ লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও ঘটনার নিন্দা করেন।